কলকাতায় পা রেখে ট্রেভর মর্গ্যানের দাবি, তিনি ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার কোচ নিয়ে নতুন বিতর্ক জানেনই না।
গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্যকে রাখার ব্যাপারে এখনও কথা বলেননি ক্লাব কর্তারা। তাঁর উপর ফুটবল কর্তারা অখুশি। মর্গ্যানের দুই অন্য সহকারী অ্যালভিটো ডি’কুনহা এবং রঞ্জন চৌধুরীকে আসতে বলে দেওয়া হলেও অতনুকে কিছুই জানানো হয়নি। এ দিকে কাল, বুধবার শুরু ইস্টবেঙ্গল অনুশীলন।
মর্গ্যান অস্ট্রেলিয়া থেকে শহরে ফিরেছেন রবিবার মাঝরাতে। একটুও সময় নষ্ট না করে সোমবার বেলাতেই ঘুরে গেলেন ক্লাব তাঁবুতে। সেখানেই তিনি বলেন, “আমি তো জানি অতনুই আমার গোলকিপার কোচ। ও না থাকলে তো আর গোলকিপার কোচই রইল না। তা ছাড়া ও গত বার দুর্দান্ত কাজ করেছে গোলকিপারদের সঙ্গে। এ নিয়ে ক্লাবের ফুটবল সচিবের সঙ্গে কথা বলব।” ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এই বিতর্কে কী বলছেন? অতনু নিজে বিভ্রান্ত। তাঁকে কেউ জানায়নি, ক্লাবের প্র্যাক্টিস শুরু বুধবার। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদারকে গোলকিপার কোচ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এই ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।” ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ কাম ফুটবলার অ্যালভিটো এ দিন বললেন, “আমার পায়ে আর কোনও ব্যথা নেই। আমি এ বার বেশি করে খেলায় মন দিতে পারব। তবে কোচিংও করাতে চাই। পরের বার মে মাসে গৌরমাঙ্গির সঙ্গে আবার ইংল্যান্ড যাব পরের কোচিং কোর্স করতে।” |
ইস্টবেঙ্গল মাঠে মর্গ্যান।-নিজস্ব চিত্র |
কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচের দিন রাতেই মর্গ্যান চলে গিয়েছিলেন তার বাড়ি পারথ-এ। সে দিন ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছিলেন, ছেড়ে দিতে চান কোচের পদ। তার পর ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে মিটমাট হয়ে গিয়েছে। এ দিন তাঁর কথাবার্তাতেও বোঝা গেল, অতীত ভুলে সামনের দিকে তাকাচ্ছেন। তবে মাঝের ৫৫ দিনে বেশ কয়েকটি রদবদল ঘটে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলে। টোলগে ওজবে-কে নিয়ে মোহনবাগানের সঙ্গে দড়ি টানাটানি। সন্দীপ নন্দী ছেড়ে গিয়েছেন। অতনুকে নিয়ে ডামাডোল। নেহরু কাপের জন্য প্রস্তুতি শিবিরে অনেক ফুটবলার ডাকার সম্ভাবনা।
সোমবার মর্গ্যান ঘুরে দেখেন ক্লাবের মাঠ। অনুশীলন শুরু করবেন বুধবার থেকে। আপাতত ঠিক করেছেন দিনে দু’বার অনুশীলন করাবেন। প্রতি বারের মতো এ বারও প্রাক-মরসুম ট্রেনিংয়ে জোর দিচ্ছেন তিনি। আর সেখানেই চিন্তার ভাঁজ তার কপালে। কারণ, এই সময়েই জাতীয় দলের ক্যাম্পে যাওয়ার কথা ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের। মর্গ্যানের কথায়, “জাতীয় দলের ক্যাম্পে যদি এই সময় ফুটবলাররা চলে যায়, তা হলে সেই ফুটবলারদের প্রাক-মরসুম অনুশীলন ঠিক মতো হবে না। ওরা নেহরু কাপ শেষে ফিরবে অগস্টে। তার পরে সেপ্টেম্বরেই ফেডারেশন কাপ। আর সারা বছর ফিটনেস সমস্যায় ভুগতে হবে দলকে।”
সন্দীপ নন্দীকে গোলের নীচে না পাওয়ার আক্ষেপ স্পষ্ট মর্গ্যানের। এ দিন বলছিলেন, “সন্দীপই আমার প্রথম পছন্দ ছিল। আমার মনে হয়, ও ভারতের প্রথম তিন জন গোলকিপারের মধ্যে আসে।” তবে টোলগে নিয়ে খুব আক্ষেপ নেই। ব্রিটিশ কোচের বক্তব্য, “টোলগের সঙ্গে ক্লাবের যা হচ্ছে তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমি শুধু এটা বলতে পারি, টোলগে যদি থাকে ভাল হয়। না থাকলে ওর বিকল্প তৈরি করতে হবে।” সেই প্রসঙ্গেই তাঁর মুখে প্রশংসা শোনা গেল চিডির। বলেন, “চিডির খেলা আমার ভাল লাগত বলেই ওকে দলে চেয়েছিলাম।”
চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানে এ বার নতুন কোচ সন্তোষ কাশ্যপ। প্রয়াগ ইউনাইটেডেও খেলবেন অনেক তারকা ফুটবলার। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বকাপার কার্লোস এর্নান্ডেজ। গত মরসুম পর্যন্ত ‘এ’ লিগে খেলায় মর্গ্যান তাঁকে চেনেন। কিন্তু এ সব নিয়ে ভাবতে নারাজ তিনি। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেন, “অন্য দলকে নিয়ে এখন না ভেবে নিজের দলকে গুছিয়ে নিতে চাই। যখন যাদের সঙ্গে ম্যাচ খেলব, তখন তাদের নিয়ে ভাবব।” আপাতত ভাবনা, অতনুর পুনর্বাসন বা বিকল্প।
|