নিজস্ব সংবাদদাতা • চণ্ডীতলা |
ভিন্ জেলায় খেতমজুরি করতে এসে হাইটেনশন বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মৃত্যু হল শাশুড়ি ও অন্তঃসত্ত্বা বৌমার। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে জখম হলেন ছেলে। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চণ্ডীতলার নৈটি পঞ্চায়েতের চিকরণ্ডে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম ফুলমনি টুডু (৪৮) ও কল্পনা টুডু (৩০)। বাড়ি বর্ধমানের জামালপুরের জৌগ্রাম আস্থাবাজারে। বিদ্যুৎ দফতরের উদাসীনতায় ওই ঘটনা ঘটেছে এই অভিযোগ তুলে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসী। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জৌগ্রামের দরিদ্র টুডু পরিবারের পাঁচ সদস্য খেতমজুরি করতে চিকরণ্ডে আসেন। ফুলমনি, কল্পনা, ফুলমনির ছেলে ভাদু চিকরণ্ডের দাসপাড়ায় ধানজমি তৈরির কাজ করছিলেন। বাকি দু’জন অন্য একটি খেতে কাজ করছিলেন। ভোর থেকে কাজ করার পরে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মাঠেই পুকুরের পারে গাছের ছায়ায় ফুলমনি, কল্পনা এবং ভাদু খাবার খেতে বসেন। সে সময়েই বিদ্যুৎবাহী একটি তার শাশুড়ি-বৌমার উপর ছিঁড়ে পড়ে। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে ভাদুও তড়িদাহত হন। তিন জনেই লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই ফুলমনি এবং কল্পনার মৃত্যু হয়। স্থানীয় মানুষজন ভিড় জমান। খবর পেয়ে চণ্ডীতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ভাদুকে উদ্ধার করে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরিবারের লোকেরা জানান, কল্পনা গর্ভবতী ছিলেন।
বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় মানুষজন বিক্ষোভ শুরু করেন। বেশ কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ চলে। শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ জনতাকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামলান পুলিশ অফিসারেরা। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়না-তদন্তের জন্য। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির শ্রীরামপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার অভিজিৎ চন্দ এ দিন সন্ধ্যায় বলেন, “দফতরের চণ্ডীতলার স্টেশন ম্যানেজারকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে বলেছি। তা এখনও হাতে পাইনি। ওই ঘটনায় দফতরের যদি কোনও গাফিলতি থাকে, তবে রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |