আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে দুর্গাপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
ডিপিএলে আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল।
২১ জুলাই পালনের প্রস্তুতি মিছিলকে কেন্দ্র করে রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ডিপিএলের আইএনটিটিইউসি-র দুই গোষ্ঠীর লোকজন বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। সংগঠনের অফিসে ভাঙচুর ও এক সমর্থককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করে তাদের সমর্থকদের মারধরের পাল্টা অভিযোগ তুলেছে অপর পক্ষ।
ডিপিএলের আইএনটিটিইউসি নেতা দেবদাস মজুমদারের অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় মিছিল বের করেন তাঁর অনুগামীরা। মিছিল শেষে বীরভানপুর দাসপাড়ায় একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময়ে কিছু লোকজন তাঁর অনুগামীদের উপরে হামলা চালায়। রঞ্জিত রুইদাস নামে এক আইএনটিটিইউসি কর্মী আহত হন। এর পরে তারা আইএনটিটিইউসি-র স্থানীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর করে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। রাতেই দেবদাসবাবুরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার কথা জানানো হয় দল ও সংগঠনের উচ্চ নেতৃত্বকেও। |
ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র। |
ডিপিএলে ঠিকা শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বেশ কয়েক বার ঝামেলা বেধেছে। জখম হয়েছেন দু’পক্ষের লোকজনই। তা ছাড়া সিটু কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেও দেবদাসবাবুর অনুগামীদের একাধিক বার ঝামেলা হয়েছে। সম্প্রতি ডিপিএল চত্বরের মধ্যে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে প্রহৃত হন এক সিপিএম কাউন্সিলর-সহ বেশ কয়েক জন সিটু কর্মী-সমর্থক। পুলিশের কাছে সিটুর তরফে দেবদাসবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
দেবদাসবাবুর অভিযোগ, “তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের মদতে কেশব মণ্ডলের লোকজন সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লেগেছে।” তাঁর দাবি, দলে ইদানিং গুরুত্ব না পেয়ে বিশ্বনাথবাবু নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় ডিপিএল-সহ নানা জায়গায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত, এ বার পুরভোটে দেবদাসবাবু ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হন। সিপিএম প্রার্থীর কাছে তিনি পরাজিত হন প্রায় চারশো ভোটে। তাঁর অনুগামীদের ধারণা, বিশ্বনাথবাবুর মদতে আইএনটিটিইউসি-র অন্য গোষ্ঠী দেবদাসবাবুকে সমর্থন না করাতেই ভোটে হারেন তিনি।
বিশ্বনাথবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি কাউন্সিলর পদে রয়েছেন। এ নিয়ে চার বার পুরভোটে জয়ী হয়েছেন। তাঁর কথায়, “দলে আমার জায়গা যথাস্থানে আছে। যাঁরা সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরাই অস্তিত্বহীনতায় ভোগেন। আর সে কারণেই অন্যদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলতে পারেন।” রবিবার রাতের গণ্ডগোল প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “সারাদিন সাধারণ মানুষের কাজকর্ম নিয়ে নিজের বাড়িতেই ব্যস্ত ছিলাম। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে যদি কেউ কোনও অভিযোগ আনেন, তা নিয়ে কিছু বলার নেই।”
আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা যদি কেউ ভেঙে থাকে, তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” দেবদাসবাবুর আনা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম-ও। ডিপিএলের সিটু নেতা তথা স্থানীয় সিপিএম নেতা নরেন শিকদারের কথায়, “অভিযোগ হাস্যকর। আইএনটিটিইউসি-র অভ্যন্তরীণ কোন্দল চাপা দিতেই সিপিএমের নাম তোলা হচ্ছে।” |