ডাকঘর

নশিপুরের রথযাত্রা
প্রচারের আলো থেকে অনেক দূরে প্রায় নিঃশব্দে ২৫০ বছর অতিক্রম করল মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী নশিপুর আখড়ার রথযাত্রা। জেলার প্রাণকেন্দ্র থেকে অনেক দূরে, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও প্রতি বছরই রথযাত্রার দিন এখানে সহস্রাধিক ভক্ত সমাগম হয়। এই রথযাত্রার ইতিহাস অনুসন্ধান করে জানা যাচ্ছে যে, রামানুজ-এর অনুগামীরা, যাঁরা ‘শ্রী সম্প্রদায়’ নামে পরিচিত, সূদূর রাজস্থান থেকে এখানে আসেন ও এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাস গবেষকদের মতে, ‘বেদ’ রচনায় মূল্যবান অবদান রেখেছিলেন রামানুজ। রামানুজ-অনুগামী লক্ষ্মণ দাস মহারাজ, ১১৬৮ বঙ্গাব্দে ধর্মীয় প্রচারে মুর্শিদাবাদ এসে জাফরাগঞ্জ এলাকায় এই আখড়া স্থাপন করেন এবং রথযাত্রার প্রচলন করেন। এর পর থেকে সেখানে প্রতি বছর নিয়ম করে রথযাত্রা পালিত হয়ে আসছে। শোনা যায়, রামদাস আচার্য আখড়ার ‘মহন্ত’ হওয়ার পরে এই রথযাত্রা এখানে এক বাৎসরিক উৎসবের রূপ নেয়। নবাবি আমলে এখান থেকে পর পর পাঁচটি রথ নগর পরিক্রমা করত। কিন্তু বিগত প্রায় দেড়শো বছর ধরে একটি কাঠের তৈরি রথ এই যাত্রায় আর অংশগ্রহণ করে না। জনশ্রুতি, অনেক বছর আগে ওই কাঠের রথে পরিক্রমণের সময়ে জগন্নাথের শরীরের তাপমাত্রা আচমকা বেড়ে যায় এবং যা পরের বছরগুলিতেও দেখা গিয়েছিল। এর পিছনে বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে, কিন্তু এর পর থেকে ‘মহন্ত’-এর ইচ্ছেয় ওই কাঠের রথটিকে আখড়াতেই রেখে দেওয়া হয়। যে চারটি রথ শোভাযাত্রায় অংশ নেয় তার একটি রূপো, দু’টি পেতল ও একটি কাঠের তৈরি। রূপোর তৈরি আট ফুটের ওই রথটিতে জগন্নাথ অধিষ্ঠিত থাকেন। অন্য তিনটি রথে থাকেন শ্রীকৃষ্ণ, রাধারানি, লক্ষ্মী, নারায়ণ, রামচন্দ্র ও সীতা। তবে লক্ষ্যণীয় রথের দিন এখানে বলভদ্র ও সুভদ্রা পূজিত হন না। রথযাত্রার দিন জগন্নাথকে তাঁর মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। তাই নবাবি আমলে মুর্শিদাবাদের ধনী ব্যবসায়ী জগৎ শেঠ-এর বাড়ি পর্যন্ত পথগুলিকে নিয়ে যাওয়া হত আর তার সাত দিন পরে উল্টোরথের দিন সেগুলি ফিরে আসত। পরে ভাগীরথীর ভাঙনে জগৎ শেঠ-এর আদি বাড়িটি তলিয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে নশিপুরে তিনি অন্য একটি প্রাসাদের মতো বাড়ি নির্মাণ করেন। এখন আর রথগুলিকে সেই বাড়িতে সাত দিন রাখা হয় না। রূপোর রথটিকে রথযাত্রার দিন বিকেলে ভাগীরথীর তীরে আনা হয় আর সেখানেই জগন্নাথের পূজার্চ্চনা করা হয়। অন্য তিনটি রথকে জগৎ শেঠ-এর বাড়ির সামনে ‘রথ প্রাঙ্গণে’ রাখা হয়, সেখানেই বসে মেলা, হয় ভক্ত সমাগম। উল্টোরথের দিনও একই ভাবে সেখানে উৎসব পালিত হয়।
ট্রাফিক আইল্যান্ড
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের গা-লাগোয়া জনবহুল এলাকা দেবগ্রাম। ওই এলাকায় চৌরাস্তা ও কাটোয়া মোড় নামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি মোড় রয়েছে। কিন্তু প্রতি দিন সকাল থেকে রাত গভীর পর্যন্ত জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে অনবরত বিভিন্ন যান চলাচল করে থাকে। ফলে এলাকার বাসিন্দাদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হয়। ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ প্রহরার দায়িত্বে রয়েছে। তবে মোড়ের মাথায় কোনও ট্র্যাফিক আইল্যান্ড নেই। এজন্য রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে ট্র্যাফিক পুলিশ আশপাশের কোনও জায়গায় আশ্রয় নেয়। ফলে ব্যস্ত ও জনবহুল ওই দু’টি মোড় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। আশপাশের জনবহুল এলাকায় ট্র্যাফিক আইল্যান্ড গড়ে উঠলেও কোনও অজানা কারণে দেবগ্রামে তা গড়ে ওঠেনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, দেবগ্রামবাসীর স্বার্থে অবিলম্বে ওই দু’টি মোড়ে ট্র্যাফিক আইল্যান্ড গড়ে তোলা হোক।
রিকশার দাপট
রিকশার দাপটে কান্দি বাসস্ট্যান্ড, মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমাশাসকের কার্যালয় চত্বরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলি দিয়ে যাতয়াত করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। রাস্তার উপরে যেখানে-সেখানে রিকশা দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রতি দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, বিশেষ করে অফিস টাইমে ওই সমস্যা ভয়াবহ আকার নেয়। ওই কারণে স্বাভাবিক চলাফেরা করার ক্ষেত্রে পথচারীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এক শ্রেণির রিকশা চালক। এ ব্যাপারে তাদের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই। বছর দু’য়েক আগে ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করে বেআইনি রিকশা চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে কান্দি পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, রিকশা স্ট্যান্ডগুলি থেকে যেমন ওই ভাড়ার তালিকা উধাও হয়ে গিয়েছে, তেমনি লাইসেন্সবিহীন রিকশা ধরপাকড়ের ব্যাপারে উদাসীন পুর-কর্তৃপক্ষ। তবে যানজট কমানোর জন্য মাস ছ’য়েক আগে কান্দি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আকর্ষণীয় একটি রিকশা স্ট্যান্ড তৈরি করে দেয় কান্দি পুরসভা। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই স্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে না রেখে রিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কারণে বাসস্ট্যান্ড চত্বর জুড়ে ব্যাপক যানজট হয়। এদিকে রিকশার পাশাপাশি কান্দি শহরে নতুন উৎপাত শুরু হয়েছে বেআইনি যন্ত্রচালিত ভ্যানের। রিকশা ও যন্ত্রচালিত ভ্যানের দাপটে যানজট কান্দি শহরে বিভীষিকা তৈরি করেছে। এর থেকে মুক্তির কোনও উপায় নেই!


জুয়ার আসর
জঙ্গিপুর হাসপাতাল মোড় থেকে ম্যাকেঞ্জি রোডের ধারে নিয়মিত তাস ও জুয়ার আসর বসছে। দেশি-বিদেশি মদের রমরমাও শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যেবেলায় মদ্যপ অবস্থায় বেসামাল লোকজনের রাস্তা পারাপারের দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন পথচারী থেকে এলাকাবাসী সকলেই। এই অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? অপকর্ম রুখতে প্রশাসনের অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.