ইটাহার
অধ্যক্ষা তালাবন্দি, নালিশ টিএমসিপি’র বিরুদ্ধে
ফের উত্তর দিনাজপুরের একটি কলেজে ঢুকে গণ্ডগোলের অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে।
বুধবার বিকেল ৪টে থেকে ইটাহারের মেঘনাদ সাহা কলেজের অধ্যক্ষার ঘর থেকে বাইরে বেরোনোর রাস্তায় একটি দরজায় তালা দিয়ে দেওয়া হয়। রাত প্রায় ৮টার সময়ে স্থানীয় বিডিও শেখ জহুর আলির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী কলেজে যায়। অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায় এবং টিএমসিপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিডিও। রাত দশটার সামান্য পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ঠিক হয়, বৃহস্পতিবার ভর্তি নিয়ে ফের বৈঠক হবে। স্বপ্নাদেবী ইটাহারের প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী। গত ৫ জানুয়ারি এই জেলারই রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে হেনস্থা ও শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল টিএসসিপি এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে।
ইটাহার কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৮ জুন প্রাথমিক মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়। তালিকায় কোনও ত্রুটি বা অসঙ্গতি থাকলে তা সংশোধনের দিন ছিল ২৯ ও ৩০ জুন। টিএমসিপি’র অভিযোগ, এই ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি শুধুই ইন্টারনেট ও স্থানীয় কেবল চ্যানেলে দেখা গিয়েছে। কলেজের নোটিস বোর্ডে টাঙানো হয়নি। তাই অনেক ছাত্রছাত্রী সেই বিজ্ঞপ্তি দেখতেই পাননি। টিএমসিপি’র দাবি, মঙ্গলবার চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা যায় অনেক ছাত্রছাত্রী বেশি নম্বর পেয়েও সেই তালিকায় স্থান পাননি। তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “এরপরে ছাত্রছাত্রীরাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরাই এই দিন অধ্যক্ষাকে ঘেরাও করে তালাবন্দি করেন। তৃণমূল এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। আমরা কেবল ওই ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে কলেজে অবস্থান করেছি।”
স্বপ্নাদেবীর অবশ্য বক্তব্য, “টিএমসিপিই আমাকে তালাবন্দি করেছিল। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ মিথ্যা। কলেজের নোটিস বোর্ডে ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। সরকারি নিয়ম মেনেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে ওই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” সেই সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ, টিএমসিপি দাবি করছে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছাত্র সংসদের সুপারিশ মেনে কিছু পড়ুয়াকে ভর্তি করাতে হবে। তিনি বলেন, “তা সম্ভব নয়। কারণ, শিক্ষা দফতরের নির্দেশ হল, ছাত্র সংসদ বা কোনও ছাত্র সংগঠনের সুপারিশ মেনে ভর্তি নেওয়া যাবে না।” টিএমসিপি নেতা শায়েস্তা আলম অবশ্য বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের জেরে বহু পড়ুয়া ভর্তি হতে পারেননি। সে কারণেই ছাত্র সংসদের সুপারিশে কিছু পড়ুয়ার ভর্তির দাবি জানিয়েছিলাম।”
তবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “ভর্তি মেধার ভিত্তিতেই এবং অনলাইন হবে। এই ব্যাপারে ছাত্র সংসদের কোনও বক্তব্যই থাকতে পারে না। অধ্যক্ষা যদি আমাদের জানান, তা হলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “অধ্যক্ষার যদি কোনও রাজনৈতিক পরিচয় থাকে, তা হলে তাঁর আচরণও খতিয়ে দেখতে বলা হবে।”
স্বপ্নাদেবী সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সমর ভৌমিকের পাল্টা দাবি, “স্বপ্নাদেবী যা করেছেন তা সরকারি নিয়ম মেনেই করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে হেনস্থা করা হল।” তাঁর অভিযোগ, “পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এই দিন ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়াতে পেরেছে।”
টিএমসিপি’র রাজ্য সভাপতি বলেন, “অধ্যক্ষকে আক্রমণ বা হেনস্থা করা আমরা সমর্থন করি না। তবু ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সদস্য জড়িত থাকলে দলীয় স্তরে তদন্ত করে অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই কলেজে একাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত ভাবে মেধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.