দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে শিলিগুড়ির এক কলেজ থেকে আরেক কলেজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেরিয়েও পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব। ইতিমধ্যেই তিনি বেশ কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ শুরু করেছেন। প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে মহকুমার সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে বৈঠকও করবেন তিনি। কলেজগুলির তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এখনও সব কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়নি। ফলে ভর্তি না হতে পারা ছাত্রছাত্রীর সঠিক সংখ্যা জানতে আরও দশ দিন সময় লাগবে। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বলেন, “একজন ছাত্রও যাতে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন তা আমরা দেখব। তবে এখনও পুরো চিত্রটি পরিস্কার নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষটির নজর রাখা হচ্ছে। কলেজগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা মেটানো হবে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি নির্দেশিকা মেনে শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে পাস ও অনার্স মিলিয়ে আসন সংখ্যা ৭২৫টি। ওই কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ১৭০০ জন। আগামী ১১ জুলাই কাউন্সেলিংয়ের শেষ দিন কমার্স কলেজে কত জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারলেন না তা পরিস্কার হবে। শিলিগুড়ি কলেজ সহ মহকুমার বেশ কয়েকটি কলেজে একই পরিস্থিতি। লাগোয়া সূর্য সেন কলেজেও কমার্সে ১২০ জনের উপরে ভর্তি হতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ি কমার্স কলেজের অধ্যাপক অসীম মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে কতজন ছাত্রছাত্রী আবেদন করেও ভর্তি হতে পারেনি তা জানা যাবে।” বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সভাপতি অমিত তালুকদার বলেন, “আমরা ভর্তি হতে না পারা ২৫০ জনের একটি তালিকা মহকুমাশাসকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নানা এলাকা ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারেননি বলে খবর আসছে। মহকুমাশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। একজন ছাত্রের ভবিষ্যৎ আমরা নষ্ট হতে দেব না। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলন হবে।” এসএফআইয়ের পক্ষ থেকেও আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, “আমরা কাউন্সেলিংয়ের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে ভর্তির সুযোগ না দেওয়া হলে আন্দোলনে নামব।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে ছাত্র ভর্তির সমস্যা নিয়ে বুধবার সূর্য সেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের দার্জিলিং জেলার কার্যকারী সভাপতি অর্ঘ্য পাল বলেন, “১২০ জন ছাত্রছাত্রী কমার্সে ভর্তি পারেননি। সবাইকে ভর্তি নেওয়ার দাবি করা হয়েছে।” টিএমসিপির দার্জিলিং জেলার সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, “এবারে সমস্ত কলেজে সরকারি নির্দেশে দশ শতাংশ আসন বাড়ানো হয়েছে। এখনও আশা রাখছি সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।” |