শহরে তো অনেক সংস্কৃতি কর্মী রয়েছেন। অনেক নাট্য দল রয়েছে। তরুণ-তরুণীদের নানাভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক দল গড়তে পারে না পুরসভা? তা হলে ওয়ার্ডগুলিতে নানা সচেতনতার কাজ ওই দলগুলিকে দিয়ে করানো যাবে।
মধুপর্ণা রায়, শিক্ষিকা
প্রস্তাবটি ভাল। আপনাদের জানিয়ে রাখি, প্রতিটি ওয়ার্ডে পুর বিধি অনুযায়ী ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। সেই কমিটি অনেক কাজ তদারকি করে থাকে। তবে সচেতনতার কাজ করানোর জন্য যে দল তৈরির প্রস্তাব দিলেন তা নিয়ে কাউন্সিলরদের সকলের মতামত জানাও জরুরি। আমরা কথা বলব।
শহর এলাকায় যারা সরকারি খাস জমিতে ২০ বছরের বেশি বসবাস করেছেন, তাদের সত্ত্ব দেওয়ার আইন আছে। পুরসভার ভূমিকা কী?
প্রণয় সরকার, আইনজীবী
আগে দেখতে হবে যারা খাস জমিতে বসবাস করছেন সেই জমিটি কোন দফতরের। পুরসভার মালিকানাধীন খাস জমিতে যারা দু দশক ধরে বসবাস করছেন সেখানে বহু আগেই পুরসভা বাসিন্দাদের সত্ত্ব দিয়েছে। রেল, সেচ বা অন্য দফতরের জমিতে যারা বসবাস করেন, সেই জমির সত্ত্ব পুরসভা দিতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকারের রাজীব আবাস যোজনা চালু হতে চলছে। সেই প্রকল্পে অন্য দফতরের জমিতে বসবাসকারীদেরও সত্ত্ব দেওয়া হবে।
জলপাইগুড়ি কর্পোরেশন হলে কি উপকার হবে?
পলাশতরু মিত্র, বিমা আধিকারিক
আমি যে এলাকার বাসিন্দা সেটি পঞ্চায়েত থেকে পুরসভা হয়েছে। পরিষেবার মান কী বেড়েছে সকলে বুঝতে পারছেন। কর্পোরেশন হলে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পাবে। জঞ্জাল, নিকাশি সমস্যাগুলির সুরাহা হবে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১২৮ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। মর্যাদার প্রশ্নও রয়েছে। তাই এটা হতেই হবে।
সমাজপাড়ায় করলার পাড়ে পার্কটি সন্ধ্যার পরে অসামাজিক কাজের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
রাহুল ভৌমিক, চিকিৎসক
সমস্যাটি জানি। পুরসভা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে।
শহর থেকে অনেকেই কলকাতা যান। সেখানে জলপাইগুড়ি পুরসভা একটি সুলভে থাকার ভবন করতে পারে না?
পারমিতা কর বিশ্বাস, সংস্কৃতি কর্মী
সুখবর দিচ্ছি। সরকারের কাছে আবেদন করে ইর্স্টান বাইপাসের ধারে একটি জমি পেয়েছি। পুরোপুরি ছাড়পত্র পাইনি। সেই জমি পেলে জলপাইগুড়ি পুর ভবন তৈরি হবে।
দিনবাজার সেতুতে অবৈধ দখলের জন্য সেতু দিয়ে হাঁটাই যায় না।
বিলাস রায়, ব্যবসায়ী
সকলের সাহায্য দরকার। আমরা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব।
শহরের নাট্যদলগুলিকে পুরসভা নানা ব্যাপারে কাজে লাগাতে পারে। সেটা ভেবে দেখবেন। আর জলপাইগুড়ি শহরে সিনেমা দেখার ভাল হল নেই। পুরসভা কিছু করতে পারে?
মৌসুমী মজুমদার, নাট্যকর্মী
নাটকের বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। সিনেমা হলগুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তবে নাগরিকরা অভিযোগ জানালে সিনেমা হলগুলির ভেতরের পরিস্থিতি পুরসভা দেখতেই পারে।
শহরের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কম খরচে সুগার বা অন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা পুরসভা নিজস্ব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করাতে পারে?
সৈকত ঘোষ, শিক্ষক
খুবই ভাল প্রস্তাব। পুরসভা ভেবে দেখবে।
স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সমস্যাটি আশু সমাধান প্রয়োজন। জেওয়াইএমএ মাঠে করলা নদীর একটি স্লুইস গেট রয়েছে. অতি বর্ষণের সময় সেই গেট খুলে দিলে খেলার মাঠটি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বিষয়টি একটু দেখবেন।
ভোলা মণ্ডল, ক্রীড়া
সংগঠক শহরের মাঠগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। মাঠগুলি সংস্কারের সিদ্ধান্ত পুরসভা নিয়েছে। স্লুইস গেটের বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে।
শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের পক্ষে সব সময় ট্রেড লাইসেন্স নবিকরণ করাতে পুরভবনে যাওয়া হয়ে ওঠে না। পুরসভা বাজারে শিবির করতে পারে না?
শান্তনু বসু, ব্যবসায়ী সমিতি প্রতিনিধি
এমন হলে ভালই হয়। মিটিংয়ে আলোচনার অবকাশ রয়েছে।
শহরে অনেক গুণীজন মূর্তি পুরসভা বসিয়েছে। কোনও বিখ্যাত বিজ্ঞানীর মূর্তি বসানো যায় না?
গৌতম ঘোষ, পরিবেশপ্রেমী
বিজ্ঞানী, বিখ্যাত নাট্যকার এবং শহরকে গৌরবাণ্বিত করেছেন, এমন কয়েকজনের মূর্তি বসানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
একসময়ে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদ ছিল। রাতারাতি নাম পাল্টে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদ হয়ে গেল। এখন সেখানে জলপাইগুড়ির কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। এর পরেও আমরা কেন এই সংস্থার অধীন থাকব? কেন জলপাইগুড়ির জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি হবে না? পুরসভা কি এ বিষয়ে কিছু ভাবছে? একটা নাগরিক কনভেনশন হোক।
প্রবীর তলাপাত্র, প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী
পুরসভা এক বার নাগরিক কনভেনশন করেছে। সেখানে আলাদা জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদ গঠনের দাবি উঠেছে। আমরা জলপাইগুড়িকে বঞ্চনার বিরুদ্ধে গোড়া থেকেই সরব। মুশকিল হচ্ছে, এখন এসজেডিএ তে জলপাইগুড়ির কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। সেখানে জলপাইগুড়ির মানুষের হয়ে আলাদা উন্নয়ন পর্ষদ গড়ার দাবিও তোলা হচ্ছে না। লড়াই চালিয়ে যাব। আলাদা জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের যে দাবি শহরবাসী করছেন তা রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।
|
তথ্য সহায়তা:
অনির্বাণ রায় ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |