লক্ষ্য জেলায় সব্জির মূল্য-নিয়ন্ত্রণ
বাজার-ভিত্তিক পরিদর্শকদল, টাস্ক-ফোর্সও
ব্জির মূল্যবৃদ্ধি-নিয়ন্ত্রণে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও টাস্ক-ফোর্স গড়া হল। বুধবার থেকে জেলা কৃষি-বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা বাজার-পরিদর্শন শুরু করেছেন বলেও প্রশাসনিক সূত্রের খবর। জেলার জন্য যে টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হয়েছে, তার নোডাল অফিসার নিযুক্ত হয়েছেন জেলা কৃষি-বিপণন আধিকারিক ব্রজেন সরকার। সঙ্গে মেদিনীপুর, খড়্গপুর, বেলদা, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড, ঝাড়গ্রামের জন্য একটি করে পরিদর্শক-দলও গঠন করা হয়েছে। যে দল পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে সব্জির দাম কেমন রয়েছে, কেউ বাড়তি দাম নিচ্ছেন কি না, এ সব খতিয়ে দেখবে। ইতিমধ্যেই মহকুমাশাসকদের কাছেও এ সংক্রান্ত নির্দেশ পৌঁছেছে। প্রয়োজনে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিয়েই বাজার পরিদর্শনে বেরোবে পরিদর্শক-দল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “জেলার জন্য একটি টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বাজারে নজরদারির কাজও শুরু হয়েছে।” জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, সব্জির দাম মোটের উপরে নিয়ন্ত্রণেই আছে। তবে, কয়েকটি বাজারে বাড়তি-দামে সব্জি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।
ফড়েদের দাপটেই খুচরো-বাজারে সব্জির দাম একলাফে অনেকটা বেড়েছে বলে অভিযোগ। পাইকারি বাজারে যে দামে সব্জি বিক্রি হচ্ছে, খুচরো-বাজারে তা একলাফে কেজি প্রতি ২০-২৫ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে সুযোগ বুঝে গোডাউনে সব্জি মজুত করেও রাখে বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসন মানতে না-চাইলেও এ জেলাতেও সব্জির দাম মাঝে অনেকটাই বেড়েছিল। ব্যবসায়ীরা অবশ্য জানিয়েছেন, ফলন কম হয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। এ বার বেশ গরম পড়েছিল। তীব্র গরমে জেলার বিভিন্ন এলাকাতেই সব্জি-চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জেলার ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুর, কেশপুর, সবং, পিংলা, ডেবরা প্রভৃতি এলাকায় কমবেশি সব্জি চাষ হয়। জেলার বাজারে যে সব্জি পাওয়া যায়, তার বেশিটাই জেলায় উৎপাদিত। গড়বেতা, ঘাটাল, দাসপুর এলাকা থেকে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের বাজারে সব্জি আসে। পাশের পূর্ব মেদিনীপুর থেকেও কিছু সব্জি আসে। গরমের জন্য এ বার অনেক জায়গার খেতেই সব্জি-গাছ ঝিমিয়ে গিয়েছে। ফলে, তেমন ফলন হয়নি।
জেলার প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে কুঁদরি, লাউ, ঝিঙে, পটল, বেগুন চাষ হয় বলে জেলা কৃষি-দফতর সূত্রের খবর। কৃষি-দফতরও মানছে, এ বার ফলন কম হয়েছে। আর ফলন কম হওয়ার জন্যেই বাজারে সব্জির দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে, বুধবার মেদিনীপুরের পাইকারি বাজারে সব্জির দাম কিছুটা নেমেছে। বেগুনের দর ছিল প্রতি-কেজি ২৫ টাকা (বড়), ১৬ টাকা (ছোট)। যেটা খুচরো বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪০ এবং ২৪ টাকা কেজিতে। পাইকারি বাজারে পটলের দাম ছিল প্রতি-কেজি ১৬ টাকা। খুচরো বাজারে তা বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২২ টাকা কেজিতে। খুচরো বাজারে কুঁদরি বিক্রি হয়েছে কেজি-প্রতি ১০ টাকা, উচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে।
মূল্যবৃদ্ধি-নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে মন্ত্রী, সচিব, অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফড়েদের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছে বিভিন্ন মহল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জেলাতেও টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হল। মঙ্গলবারই এ নিয়ে বৈঠক হয়। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রশাসনিক পদক্ষেপের কথা মহকুমাশাসকদের জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকুমার সাইনি। মেদিনীপুরের রাজাবাজার, স্কুলবাজার, গেটবাজার, কোতোয়ালি বাজার এলাকা ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য ৫ সদস্যের একটি পরিদর্শক-দলও গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন দীপেন্দুবিকাশ মহাপাত্র।
খড়্গপুরের গোলবাজার-সহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখার জন্যও ৬ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন সমীর দে। বেলদার জন্য ৭ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন পিনাকীপ্রসাদ পাত্র। গড়বেতার আমলাগোড়ার জন্য ২ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন উজ্জ্বল সিংহরায়। চন্দ্রকোনা রোডের ক্ষেত্রেও ২ সদস্যের পরিদর্শক-দল গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন অশোককুমার ঘোষ। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রামের জন্য যে ২ সদস্যের দল গঠন করা হয়েছে, তার নেতৃত্বে রয়েছেন অঞ্জন ঘোষাল। পরিদর্শক-দলে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সকলেই কৃষি-বিপণন দফতরের অফিসার। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পুরো জুলাই মাস জুড়ে বাজার-পরিদর্শন চলবে। কোনও বাজারে চড়া দামে সব্জি বিক্রি হচ্ছে দেখলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.