|
|
|
|
নন্দীগ্রাম-মামলা |
‘স্বস্তি’ সিপিএমে, রায়ের অন্য দিক দেখছে তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নন্দীগ্রাম-মামলার নির্দেশের পর্যবেক্ষণে কিছু মন্তব্যের জন্য সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টকে ‘সতর্ক’ করে দেওয়ায় ‘স্বস্তি’তে সিপিএম। এর পরে বর্তমান রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল নেতৃত্বের ‘কানে জল ঢোকে’ কি না, সেই অপেক্ষা করছে তারা।
পক্ষান্তরে, তৃণমূল বিষয়টিকে অন্য দিক থেকে দেখার চেষ্টা করছে। নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের গুলি চালনার ঘটনাকে কলকাতা হাইকোর্ট ‘অসাংবিধানিক’ বলে যে রায় দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট তা-ই বহাল রেখেছে বলে সিপিএম নেতৃত্বের ‘উল্লসিত’ হওয়ার কোনও কারণ নেই পাল্টা এমনই বলছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
নন্দীগ্রাম মামলায় পুলিশের গুলি চালনাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দেওয়ার সময় কলকাতা হাইকোর্ট সিপিএম সম্পর্কে কিছু ‘কড়া মন্তব্য’ করেছিল। তার মধ্যে ছিল, হাওয়াই চটি পরে পুলিশের পোশাকে সিপিএমের কর্মীরা ঘটনার দিন গুলি চালিয়েছে। পুলিশকে ব্যবহার করে সিপিএম নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করেছিল। এই ধরনের মন্তব্যের জন্যই হাইকোর্টকে ‘সতর্ক’ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ওই পর্যবেক্ষণ যেন কোনও ভাবেই মামলার পরবর্তী পর্যায়কে প্রভাবিত না-করে। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্নের জবাবে বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বুধবার বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে বলেছিলাম যে, আমাদের দলকে নন্দীগ্রাম মামলায় জড়ানো হচ্ছে। তাই আমরা মামলাটায় পক্ষ (পার্টি) হয়েছিলাম। রাজ্য সরকার পরে মামলা তুলে নেয় কিন্তু আমরা বলি, আমাদের কথা শুনতে হবে পক্ষ হিসাবে। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের কথা শুনেছে এবং যা বলার বলেছে। এতে আমাদের আর কী বলার আছে!” এর সঙ্গেই বর্তমান শাসক দলের উদ্দেশে সূর্যবাবুর মন্তব্য, “এখন কানে জল ঢুকলে হয়!”
রাজ্যের কোনও মন্ত্রী অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের মতের বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “এ নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের উল্লসিত হওয়ার কারণ নেই! সুপ্রিম কোর্ট বিমান বসুদের স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন (এলএলপি) খারিজ করে হাইকোর্টের পুরনো রায়কেই বহাল রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করার। নন্দীগ্রামের অত্যাচারিত মানুষ তাই চান। সিপিএম নন্দীগ্রামকে যতই প্রচারে আনবে, মানুষ থেকে ততই বিচ্ছিন্ন হবে। শুভেন্দুর মতে, সিপিএমের মূল লক্ষ্য ছিল, ২০০৭-এর ১৬ নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে বাতিল বা বাধাপ্রাপ্ত করা। বস্তুত, হাইকোর্টকে যে মন্তব্য করার জন্য ‘সতর্ক’ করেছে সর্বোচ্চ আদালত, সেই কথাগুলিরই পুনরাবৃত্তি করেছেন শুভেন্দু! তাঁর কথায়, “তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার যেমন সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি দায়ের করেছিল, পাশাপাশি বিমানবাবুর নেতৃত্বে ওঁদের দলের রাজ্য নেতৃত্ব ওই মামলায় আগ বাড়িয়ে পক্ষ হয়ে গুলি চালনার দায়ে অভিযুক্ত সিপিএমের বশংবদ পুলিশ অফিসার ও চপ্পল-পরা সিপিএম ক্যাডারদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন! সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি।”
|
|
|
|
|
|