|
|
|
|
সরকার অগণতান্ত্রিক |
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই বিঁধলেন সিপিএমের সাংসদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতির ফলেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। বুধবার খড়্গপুরে এসে তিনি বলেন, “খাদ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বজনীন গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। কেন্দ্র-রাজ্য, দুই সরকারের নীতির কোনও পার্থক্য নেই। আগে কলকাতার সঙ্গে দিল্লির বাজারে জিনিসপত্রের দরদামের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ তফাৎ থাকত। এখন তা কমে ৫ থেকে ৬ শতাংশ হয়েছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।” মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিরোধীদের সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব নাকচ করে রাজ্য সরকার অগণতান্ত্রিক পথে চলার বার্তা দিতে চেয়েছে বলেও মনে করেন বাসুদেববাবু। তিনি বলেন, “বিরোধীদের থেকে সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব এল। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, জিনিসপত্রে দাম কমছে না। তা বেড়েই চলেছে। |
|
বক্তব্য রাখছেন বাসুদেব আচারিয়া। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
সকলে মিলে আলোচনা করলে তো ভালই হত। মুখ্যমন্ত্রী সে প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়ে বোঝালেন, সরকার গণতান্ত্রিক পথে যেতে চাইছে না।”
দু’টি কর্মসূচিতে যোগ দিতে বুধবার খড়্গপুরে এসেছিলেন বাসুদেববাবু। প্রথমে তিনি মালঞ্চ-য় এলআইসি এজেন্টদের এক ধর্না-অবস্থানে যোগ দেন। পরে খড়্গপুর আইআইটিতে বামপন্থী শ্রমিক-কর্মচারিদের এক কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন। জিনিসপত্রের দাম নিয়ে যাঁরা কালোবাজারি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন সিপিএম সাংসদ। তিনি বলেন, “কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। অথচ খোলাবাজারে দাম বেড়েই চলেছে। দাম বাড়ার মূলে সরকারের নীতিই দায়ী। এ ক্ষেত্রে আগাম-বাণিজ্য (ফরওয়ার্ড ট্রেডিং) বন্ধ করতে হবে। যারা কালোবাজারি করে মুনাফা করছে, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এ জন্য আরও কঠোর আইন করতে হবে। প্রয়োজনে যে আইন রয়েছে, তা সংশোধন করতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন,“ শুধু বাজারে ঘুরলে কিছু হবে না। দাম তো বেড়েই যাচ্ছে। কিছু ঠিক পদক্ষেপ করতে হবে। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসবে।”
এলআইসি এজেন্টদের ধর্না-অবস্থানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাসুদেববাবু বলেন, “আমরা এজেন্টদের সামাজিক সুরক্ষার মধ্যে নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছি। শুধু গ্র্যাচুইটি দিলে হবে না। প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন চালু করতে হবে।” তাঁর বক্তব্য, সরকার বিমাকেও বেসরকারিকরণের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। বিমা-ক্ষেত্রে এখন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ২৬ শতাংশ রয়েছে। এটা বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী অধিবেশনে বিলটি পেশ হতে পারে। এর ফলে আমাদের দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা কোম্পানিগুলি দুর্বল হয়ে পড়বে।” সাংসদ জানান, দেশে এলআইসির প্রায় ১২ লক্ষ এজেন্ট রয়েছেন। কিন্তু, সরকারের নীতির ফলে অনেকে কাজ হারাচ্ছেন। পাশাপাশি এ দিন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়েরও সমালোচনা করেন বাসুদেববাবু। তিনি বলেন, “দিল্লিতে দফতর রয়েছে। উনি কলকাতায় বসে রেল চালাচ্ছেন। রেলকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। যাত্রী সুরক্ষার দিকে কারও নজরই নেই।” রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মনোনয়ন নিয়ে বিজেপি যে প্রচার চালাচ্ছে, তা ঠিক নয় বলেও এ দিন মন্তব্য করেন সিপিএম সাংসদ। তিনি বলেন, “এই ভাবে প্রচার করা ঠিক নয়। এ রকম ছোটখাটো ব্যাপারে আপত্তি জানানো অনুচিত। বিজেপি যেটা করছে, সেটা ঠিক করছে না।” এলআইসি এজেন্টদের কর্মসূচি থেকে আইআইটিতে পৌঁছন বাসুদেববাবু। সিটু ও এআইটিইউসি-র উদ্যোগে এখানে শ্রমিক-কর্মচারীদের এক কনভেনশন হয়। উপস্থিত ছিলেন এআইটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক রঞ্জিত গুহ। কনভেনশন থেকে ন্যূনতম মজুরি দেওয়া-সহ কয়েকটি দাবি তোলা হয়। |
|
|
|
|
|