মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে নামলেন হিমঘরের মজুরেরা
তিরিশ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত শুক্রবার থেকে তৃণমূলের মজুর সংগঠন ধর্মঘট শুরু করেছে গোঘাটের ভিকদাসের একটি হিমঘরে। এর ফলে হিমঘরে মজুত আলু পৌঁছচ্ছে না বাজারে। অসুবিধায় পড়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি গুদাম থেকে মজুত আলু না বের হওয়ায় কর্তৃপক্ষও সমস্যার মুখে পড়েছেন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এলাকার চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গেই মজুরদের লেনদেন। চাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন অনুসারে হিমঘর থেকে আলু বের করা, বাছাই করা ইত্যাদি কাজ করেন ‘বাছাই শ্রমিক’ বা ‘বাছনদার’রা। প্রতি বছর বাছনদারদের মজুরি নির্দিষ্ট করতে সরকারে থাকা দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, চাষিরা যৌথ ভাবে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত বারের মজুরির হার ছিল বস্তা-পিছু ৫ টাকা ৮ পয়সা। জুন মাসে সেই হারের মেয়াদ শেষ হয়। গোঘাট থানা এলাকার মোট ১১টি হিমঘরের শ্রমিকদের নতুন হারে মজুরি ঠিক করতে কয়েক দিন আগে কামারপুকুরের হিমঘরে একটি বৈঠক হয়। সেখানে জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি বিদ্যুৎ রাউতের প্রতিনিধি হিসাবে হাজির ছিলেন তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের স্বপন সামন্ত, গোঘাটের তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। সেই বৈঠকে শ্রমিকেরা দাবি তোলেন তাঁদের মজুরি ন্যূনতম ২৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা জানান, মজুরি ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না।
বৈঠক শেষে ১৫ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো গোঘাট থানা এলাকার ১১টি হিমঘরের মধ্যে ১০টিতে কাজও শুরু হয়। কিন্তু গত সোমবার ভিকদাসের হিমঘরটিতে ৮০ জন শ্রমিক ওই হারে কাজ করতে অস্বীকার করেন। তিরিশ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনঢ় থেকে ধর্মঘট শুরু করেন সকলে।
ভিকদাস হিমঘরের শ্রমিকদের মধ্যে নেতৃত্বে থাকা পরেশ ধাওড়ে, আসরফ আলির বক্তব্য, “বস্তা-পিছু মাত্র ৭৫ পয়সা মজুরি বাড়ছে। এতে আমাদের কোনও উপকার হচ্ছে না। বাজারের জিনিসের দাম বাড়ার কারণে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছি আমরা।”
অন্য দিকে কামচে গ্রামের চাষি বিমল ঘোষ বলেন, “এক বিঘা আলু চাষ করতে প্রায় ১২-১৪ হাজার টাকা খরচ। এ বারের মতো দাম পেলে বাছাই শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে আপত্তির কোনো কারণ নেই। আমরা চাই দ্রুত সমস্যার সমাধান হোক।” ব্যবসায়ীদের পক্ষে ‘গোঘাট প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক অভয় কুণ্ডু বলেন, “অতীতে বরাবর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বেড়েছে। এ বার ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছ। অন্য সব জায়গায় মানা হলে এখানে না মানার কারণ কী? আমরা চাষির থেকে আলু কিনে ব্যবসা করি। শ্রমিকদের আরও মজুরি বাড়ালে আমরা লোকসান করব!”
স্বপন সামন্ত বলেন, “ভিকদাস হিমঘরের শ্রমিকদের ধর্মঘট সমর্থন যোগ্য নয়। সমস্যা মেটাতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি।” হিমঘরের মালিক সুনীল ঘোষের কথায়, ‘‘সমস্ত বিষয়টি মহকুমা প্রশাসনে জানিয়েছি। শ্রমিকেরা ধর্মঘট করায় হিমঘরে আলু মজুত থেকে যাচ্ছে। সেই দায় এড়াতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
এ বিষয়ে মহকুমা শাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.