মৃত্যুকে শিল্পের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন যে কবি, আধুনিক অসমিয়া কবিতার রূপকার সেই হীরেন ভট্টাচার্য আজ প্রয়াত হলেন। বয়স হয়েছিল ৮০। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মাস খানেক ধরে গুয়াহাটির দিসপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে পরে আজ সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই হাসপাতাল চত্বরে গুণমুগ্ধ ও বিদগ্ধজনের ভিড় জমে। তাঁর মৃত্যুতে এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, অন্য দিকে সংগ্রামপন্থী আলফা সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া দু’জনেই শোকজ্ঞাপন করেছেন। কেবল জীবনের সুন্দর সুললিত ছন্দই নয়, ঘাম, রক্ত, শ্রমের গাঁথনি হীরেনবাবুর কাব্য জুড়ে। প্রবীণ নয়, নবীন প্রজন্মেরও কাছের মানুষ ছিলেন রসিক, আড্ডাপ্রিয় ‘হীরুদা’।
১৯৩২ সালে যোরহাটে হীরেন ভট্টাচার্যের জন্ম। বাবা তীর্থনাথ ভট্টাচার্য ছিলেন জেলার। তাই রাজ্যের নানা স্থানে ঘুরতে হয়েছে তাঁকে। বি বরুয়া কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে আউনিআটি কমলাদেও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতায় ঢোকেন। সেই সঙ্গে চলে অসমিয়া ও বাংলায় কাব্যচর্চা। তাঁর কাব্যগ্রন্থ ও সংকলনগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সুগন্ধী পখিলা, প্রেম আরু রোদালি, তুমার বাঁহী, রৌদ্র কামনা, কবিতার রোদ, মোর দেশ মোর প্রেমের কবিতা, শইচর পথার মানুহ, ভালপোয়া বুকামাটি, ভালপুয়ার দিকৌ বাতেরে, জোনাকি মন, লড়া ধেমালি ইত্যাদি। হীরেনবাবু বিষ্ণু রাভা পুরস্কার, রঘুনাথ চৌধুরি পুরস্কার, রাজাজি পুরস্কার, সোভিয়েত নেহরু পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি, বজালিনী ও সৌহার্দ্য সম্মান, অসম উপত্যকা সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। |