নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
জেলা প্রশাসন হস্তক্ষেপ করলেও, আসানসোলে কাঁচা সব্জির বাজারদর এখনও সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বুধবারও আসানসোল, কুলটি, বার্নপুরের একাধিক বাজারে সব্জিবাজার ঘুরে দেখলেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাতে বাজার-দর সাধ্যের মধ্যে এসেছে, তা এখনও মনে করছেন না সাধারণ ক্রেতারা। যদিও আসানসোলের মহকুমাশাসক সুরজিৎ দত্তশর্মার দাবি, গত তিনদিনের তুলনায় বুধবার অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন সাধারণ মানুষ। তাঁর কথায়,“জেলাশাসকের নির্দেশে একাধিক ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে একাধিক দল গঠন করে আমরা শিল্পাঞ্চলের বাজারগুলিতে হানা দিয়েছি। গত তিন দিনের অভিযানে দর অনেকটা কমেছে।”
এমনিতেই প্রতি দিনের চাহিদা মেটাতে শিল্পাঞ্চলে সব্জির উৎপাদন বেশ কম। বাইরে থেকে সকাল-সকালই পাইকারি বাজারে চলে আসে চালানি সব্জি। দালালদের হাত ঘুরে সেই সব্জি যায় খুচরো ব্যবসায়ীদের হাতে। তাঁদের কাছ থেকেই চড়া দামে সব্জি কিনতে বাধ্য হন ক্রেতারা। বুধবার শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা য়ায়, সবচেয়ে অগ্নিমূল্য কাঁচা লঙ্কা। কেজি প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে কাঁচালঙ্কার দাম। পেঁপের দামও ন্যূনতম ৪০ টাকা। সাধারণ আলুর দাম গত দু’দিনের তুলনায় উল্লেযোগ্য ভাবে না কমলেও চন্দ্রমুখী আলুর দাম অবশ্য প্রতি কেজিতে ২ টাকা করে কমেছে। পটলের দর রয়েছে কেজি প্রতি ৩০-৩২ টাকার মধ্যে। বাঁধাকপি, ফুলকপি-সহ কিছু অসময়ের সব্জির দিকে হাত বাড়ানোরও উপায় নেই। তার দামও আকাশ ছোঁয়া। আসানসোলের কোর্ট বাজারে সব্জি কিনতে এসে বাজার দর শুনে বিরক্ত পার্থ বৈরাগ্যের কথায়, “আলুভাতে ভাত খাওয়াও এখন সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।”
শুধুমাত্র চালানি সব্জিই যে আসানসোল বাজারে ঘোরাফেরা করে তা নয়। বারাবনি, সালানপুর, বার্নপুর এলাকার বেশ কিছু গ্রামে কাঁচা সব্জির চাষ হয়। সরাসরি মাঠ থেকে তুলে ঝাঁকায় করে সেই সব্জি বাজারে নিয়ে আসেন চাষিরা। গ্রাম থেকে সরাসরি আসা টাটকা সব্জি ক্রেতাদের পছন্দ হওয়ায় সব্জি বিক্রেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়া দামে সব্জি বিক্রি করছেন গ্রামের চাষিরাও । এমনই এক বিক্রেতা তাপস মাজির বক্তব্য, “এবার সব্জির উৎপাদন কম। যেটুকু হয়েছে তা বিক্রি করে যত বেশি দাম পাওয়া যায় তা আমরা নিচ্ছি।” অপর এক বিক্রেতা ধরম মাহাতো বলেন, “দূর থেকে সব্জি আনতে হয়। তাই ক্রেতাদের কাছে চড়া দর হেঁকেই এসব সব্জি বিক্রি করছি।” বানর্পুর বাজারের এক ক্রেতা শিপ্রা দেশমুখ এ দিন বলেন, “শুনছি বাজার-দর নাকি কিছুটা কমেছে। কিন্তু আজ এসে তো সেরকম কিছইু বুঝলাম না। কার্যত পুরনো দামেই সব্জিগুলো বিকোচ্ছে।”
বুধবার সকাল থেকে আসানসোলের পাইকারি ও খুচরো বাজার ঘুরে দেখেন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজারগুলিতে সব্জির মূল্যের সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য বিক্রেতাদের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তাপসবাবু বলেন, “আশপাশের গ্রামের চাষিরা সব্জির ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন কিনা দেখার পাশাপাশি দালালদের কারসাজিতে যাতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস না ওঠে তা-ও আমরা দেখছি।”
|