|
|
|
|
কোথাও কমেছে, কোথাও কমেনি |
এত হাত ঘুরলে কে দেবে লাগাম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
এক সপ্তাহেই কাঁচা লঙ্কার দাম কমেছে ৫০ শতাংশ। বাকি সব্জির দামও কমবেশি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে। তবু বছরের এই সময়ে সব্জির দাম যা থাকে সেই তুলনায় বাজার এখনও অগ্নিমূল্য।
দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে জানা গিয়েছে ক্রেতারা এমনই ভাবছেন। তাঁরা বলছেন, পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারের দামের হেরফের দিন কয়েক আগেও বেশ বেশি ছিল। তবে শেষ দু’তিন দিনে সেই ফারাক অনেকটাই কমেছে।
ছবি: বিশ্বনাথ মশান |
দীর্ঘদিন ধরেই সব্জির দাম বেশ বেশি তবে শেষ একমাসে লাফিয়ে লাফিয়ে তা আকাশ ছুঁয়েছে। ক্রেতারা জানিয়েছেন, এক মাসে আলুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫ টাকা। লঙ্কার অন্তত চারগুণ। পেঁয়াজ ১০ টাকা থেকে ১৪ টাকা। ঝিঙে ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। বেগুনের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। টম্যাটোর দাম বেড়েছে তিনগুণ। কুমড়ো ১০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা। পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে শশা, লাউ, পেঁপে, বরবটির। তাই বাজারে ঢুকলেই চোখ পড়ে সব্জির দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে তর্ক। তবে গত দু’তিন দিনে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও বদলেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তাঁদের মতে, দাম কমার মূল কারণ, পাইকারি বাজার ও খুচরো বাজারের দামের পার্থক্য কমা। চন্ডীদাস বাজারে দেড় দশক ধরে সব্জি কেনেন বি জোনের জয়দেব অ্যাভিনিউয়ের সন্দীপন মান্না ও বিমল মুখুটি। তাঁরা বললেন, “একটু যেন হাঁফ ছাড়তে পারছি। আলু, পেঁয়াজের দাম না কমলেও পটল, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়শ, উচ্ছে, বেগুনের দাম বেশ কমেছে।” তবে দাম যে আরও কমতে পারে তার আভাস মিলেছে দুর্গাপুরের প্রধান পাইকারি বাজার সেন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছে।
দুর্গাপুরের মূল পাইকারি বাজার হল সেন মার্কেট। বাঁকুড়া ও দামোদরের মানা থেকে মূলত সব্জি আসে এখানে। এরপর তা কিনে নিয়ে যান শহরের বিভিন্ন বাজারের খুচরো বিক্রেতারা। মূলত, বেনাচিতি, চন্ডীদাস, মামরা, মুচিপাড়া, স্টেশন বাজারের খুচরো বিক্রেতারা এখান থেকে পাইকারি হারে সব্জি কিনে নিয়ে যান। মুচিপাড়া বা পানাগড়ের বাজারে অবশ্য কাঁকসার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সরাসরি চাষিরা এসেও সব্জি দিয়ে যান। সেন মার্কেটের ব্যবসায়ী ভুদেব কুন্ডু, তরুণ গড়াই’রা জানান, ভোরবেলায় গ্রাম থেকে সব্জি আসে। সূর্যের আলো ফোটার আগেই তা কিনে নিয়ে চলে যান খুচরো ব্যবসায়ীরা। সেভাবে গুদামজাত করে রাখার রেওয়াজ নেই এ বাজারে। তাহলে খুচরো বাজারে সব্জির দাম কেন এত বেশি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, মূলত ফড়েরাই এজন্য দায়ি। কিন্তু কীভাবে? তাঁরা জানিয়েছেন, গ্রামের চাষীদের কাছ থেকে সব্জি কেনে তারা। তারপর গাড়িতে করে সেই সব্জি আড়তে আনা হয়। মূলত, তাদের ধার্য করা দামেই আড়তদাররা সব্জি কেনেন। তবে আড়ত থেকে সরাসরি খুচরো বিক্রেতারা তেমন একটা সব্জি কিনতে আসেন না। সেখানেও একদল ফড়ে রয়েছে। তারা আড়ত থেকে নিলামে সব্জি কিনে পৌঁছে দেয় খুচরো বিক্রেতাদের কাছে। ব্যবসায়ীদের মতে এই নিলামেই যত গন্ডগোল। কারণ বেশি দাম দিয়ে সব্জি কিনে তার উপর লাভ রেখে তবেই খুচরো বিক্রেতাদের কাছে তা বিক্রি করেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|