অসুস্থ বন্দির অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করতে প্রায় ছ’মাস আগে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। অভিযোগ, তা এখনও পালন করেননি আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ।
২০০৮ সালে গড়িয়াহাটের ফ্ল্যাটে খুন হয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী উষা চোখানি। ওই খুনের ঘটনার অভিযুক্ত কিষণ সিংহ যাদব। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি কিষণের বিচার চলছে। তার আইনজীবী শুভময় সমাদ্দার জানান, কিষণের দু’পায়ে ৬টি করে আঙুল। কড়ে আঙুলের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে অতিরিক্ত আঙুলটি। ডাক্তারি পরিভাষায় ওই শারীরিক সমস্যার নাম, ‘সিনড্যাক্টিলাই’। মাস ছ’য়েক আগে থেকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয় দু’পায়েই। যন্ত্রণায় সে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। চলতি বছর জানুয়ারিতে বিচারকের কাছে যন্ত্রণার কথা জানিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছিল কিষণ। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত ওই সময়ে জেল কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
জানুয়ারি মাসে দেওয়া বিচারকের ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে এ বছর মার্চ মাসে আদালতে একটি রিপোর্ট পাঠায় জেল কর্তৃপক্ষ। তাতে জানানো হয়, এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে কিষণের পরীক্ষা করানো হয়েছে। দ্রুত তার ডান পায়ে অস্ত্রোপচার করা হবে। এপ্রিল মাসে ফের জেলের তরফে জানানো হয়, ওই বিভাগে রোগীদের ভিড় রয়েছে। কিষণের নাম রয়েছে অপেক্ষার তালিকায়। সময় এলেই তার অস্ত্রোপচার হবে। কিন্তু এর পর থেকে ওই বন্দির শারীরিক পরিস্থিতির ব্যাপারে জেলের তরফে আদালতে আর কোনও রিপোর্ট পাঠানো হয়নি বলেও অভিযোগ।
গত শনিবার আদালতে ফের নিজের যন্ত্রণার কথা জানায় কিষণ। অতিরিক্ত দায়রা আদালতের (নবম ফার্স্ট ট্র্যাক) বিচারক মির রসিদ আলি তার কাছে জানতে চান, “আপনাকে কি ওষুধও দেওয়া হচ্ছে না?” জবাবে বছর সাতাশের কিষণ বলে, “না হুজুর। অসহ্য ব্যথায় খুব কষ্ট পাচ্ছি।” এর পরই কিষণের সমস্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে ১০ জুলাই জেল কর্তৃপক্ষকে হাজির হতে নির্দেশ দেন বিচারক।
আদালতের ওই নির্দেশের ব্যাপারে আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার বিপ্লব দাস বলেন, “কিষণকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসক পরামর্শ দিলে দ্রুত তার অস্ত্রোপচার করানো হবে।” |