কালনা-কাটোয়ার পরে এ বার আসানসোল ও দুর্গাপুরে মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে এল রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপ। দলে ছিলেন সাংসদ রত্না দে নাগ, টেকনিক্যাল অফিসার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় ও জলি চৌধুরী। দুই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন তাঁরা। কথা বলেন রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। পরে তাঁরা জানান, কলকাতায় ফিরে তাঁরা সংশ্লিষ্ট দফতরকে রিপোর্ট দেবেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ প্রথমে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে ঢোকেন সাংসদ ও অফিসারেরা। ছিলেন ঘণ্টা পাঁচেক। হাসপাতালের সমস্ত বিভাগ ঘুরে দেখেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অরিতা সেন চট্টরাজ, হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস, নার্সিং সুপার মনিকা ঘোষ। পরে হাসপাতাল সুপারের ঘরে বৈঠক হয়। সুপার জানান, বর্তমানে শয্যা রয়েছে ২৮৯টি। তা বাড়িয়ে ৪৫০ করার প্রক্রিয়া চলছে। ‘ট্রমা কেয়ার ইউনিটে’র বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ হবে ডিসেম্বরে। ‘পিপিপি’ পদ্ধতিতে সিটি স্ক্যান সেন্টার বানানো হবে। |
প্রসূতি কক্ষের সংখ্যা ৪ থেকে বাড়ানো হবে। নথিপত্র রাখার জন্য আলাদা কক্ষ এবং সহায়তা কেন্দ্রও গড়া হচ্ছে। এসএনসিইউ-এর পাশে নিউ বর্ন বিভাগ গড়া হবে। হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের জন্য হবে ৫০ শয্যার প্রতীক্ষালয়। রান্নাঘর নিয়ে যাওয়া হবে হাসপাতালের বাইরে। নির্দিষ্ট করা হবে পার্কিং জোন। পুলিশ ক্যাম্প হবে। এই কাজগুলি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এটির জেলা হাসপাতাল স্তরে উন্নীত হতে অসুবিধা হবে না।
দুপুর ৩টে নাগাদ দলটি পৌঁছয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে তাদের সঙ্গে ছিলেন সুপার দেবব্রত দাস, প্রাক্তন সুপার মিহির নন্দী প্রমুখ। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন সাংসদ ও অফিসারেরা। রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। রোগীরা তাঁদের কাছে নানা অভাব-অভিযোগের কথা জানান। পেটে ব্যথা নিয়ে অন্ডাল গ্রাম থেকে এসে ভর্তি হযেছেন উজ্জ্বল ধীবর। বীরভূমের ইলামবাজার থানার বদিপুর গ্রাম থেকে এসে ভর্তি আছেন আজিজুল হক। তাঁর বাঁ হাত ভেঙেছে। দু’জনেরই অভিযোগ, চিকিৎসায় অহেতুক বিলম্ব হচ্ছে। দুর্গাপুর রেলবস্তির বাবলু দাস ভর্তি হয়েছেন পেটের ব্যথা নিয়ে। বিশেষ ধরনের যে এক্স-রে করতে হয়েছে তার ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই। ফলে অন্যত্র গিয়ে গাঁটের কড়ি খরচা করতে হয়েছে। তাঁর অনুযোগ, “আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। উপায় না থাকায় অনেক টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে হল।” পরিদর্শনকারীরা সমস্ত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে নেন।
পরে রত্নাদেবী জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হবে। বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মী-সংখ্যার অপ্রতুলতার অভিযোগ মেনে নিয়ে তাঁর আশ্বাস, ইতিমধ্যেই নিয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে। |