প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের স্তন এবং জরায়ুর ক্যানসার রুখতে নতুন এক পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি সংস্থা। ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’ (আইভিএফ) পদ্ধতিতে মানবভ্রূণ থেকেই স্তন ও জরায়ুর ক্যানসার সৃষ্টিকারী জিনগুলিকে বাদ দেওয়া যাচ্ছে বলে ওই সংস্থাগুলির দাবি। সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার দু’টি ক্লিনিকে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। অন্তত দশ জন দম্পতি এই পদ্ধতির আশ্রয় নিয়েছেন।
স্তন ও জরায়ুর ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণত বিআরসিএ ১ এবং বিআরসিএ ২ জিন দু’টি। দেখা যায়, কোনও মহিলার দু’টি জিনই পরিবর্তিত হয়ে গেলে (অর্থাৎ মিউটেশন ঘটলে) স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে ৬০-৮০%। শুধু বিআরসিএ ১ জিনে পরিবর্তন হলে জরায়ুর ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে ৬০% এবং শুধু বিআরসিএ ২ জিনে পরিবর্তন হলে জরায়ুর ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে ২০%। আইভিএফ পদ্ধতিতে মানবদেহের বাইরে কৃত্রিম ভাবে শুক্রানু ও ডিম্বানুর মিলন ঘটিয়ে ভ্রুণ তৈরি করা হয়। এর পর ওই ভ্রুণের জিনগত বিশ্লেষণ করা হয়। যদি দেখা যায় পরিবর্তিত জিনগুলি ভ্রুণের দেহে রয়েছে, তা হলে সেগুলি বাদ দেওয়া হয়। এর পর সেই ভ্রুণটিকে মায়ের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে একেবারে গোড়াতেই দু’ধরনের ক্যানসার নির্মূল করা যেতে পারে বলে দাবি করেছেন মেলবোর্নের এক আইভিএফ ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত লিন্ডন হ্যালে। ওই চিকিৎসকের কথায়, “অনেকেই নিজেদের বংশতালিকা থেকে ক্যানসার নির্মূল করতে চান। সেই জন্যই তাঁরা এই পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছেন।”
কী বলছেন এ দেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা? ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় এই নতুন পদ্ধতিকে স্বাগত জানালেও বলেন, “ব্যাপারটাকে আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন। যে ভ্রূণ থেকে জিন সরানো হল, সেই শিশু যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখন সে ক্যানসারমুক্ত হবে কি না সেটা দেখা দরকার। যদি তা হয়, তা হলে ভবিষ্যতে এই পদ্ধতি চিকিৎসা হিসেবে চালু হতেই পারে।” |