ইউকো ব্যাঙ্কের শিলিগুড়ির বর্ধমান রোড শাখার প্রতারণা কাণ্ডে ব্যাঙ্কের আরও চারজন অফিসার-কর্মীর জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। ওই চারজনের মধ্যে দুই জন অফিসার এবং দুই জন কর্মী আছেন। এমনকি, ইতিমধ্যে এদের একজন অবসর নিয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস অবধি প্রতারণার ঘটনাগুলি ঘটে। ওই চারজন ওই সময়ে কর্মরত ছিলেন। দার্জিলিং জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “তদন্ত ঠিকই এগোচ্ছে। পাঁচজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে। সব খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কের এক কর্তা বলেন, “বিভাগীয় তদন্ত চলছে। পাঁচজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শাখার ১৩ জন কর্মীকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। পুলিশকে সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে।” ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ৪৯ জন প্রতারিত গ্রাহককে প্রায় ৯৬ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। দু’জনকে কাগজপত্রের কিছু জটিলতার জন্য টাকা দেয়নি ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে ঘটনার পর বাবু মণ্ডল নামের এক গ্রাহক আত্মহত্যা করেন। তাঁর সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা এবং কমল পাল বলে আরেক গ্রাহকের আড়াই লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। টাকা মেটানো নিয়ে প্রথম থেকেই সোচ্চার হন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতৃত্ব। এলাকার নেতা কৌশিক দত্ত বলেন, “প্রতারিত সকল গ্রাহকের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে প্রায় পুরোটাই হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে সাধারণ গ্রাহকদের এইভাবে হেনস্থা তা দেখতে বলা হয়েছে।” মে মাসে ওই শাখায় স্থায়ী আমানতকে (ফিক্সড ডিপোজিট) ঘিরে গোলমাল শুরু হয়। কয়েকজন গ্রাহক ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজপত্র নিয়ে ব্যাঙ্কে টাকা তোলার জন্য যান। তাঁদের বলা হয়, কম্পিউটারে ওই ধরণের কোনও তথ্য দেখাচ্ছে না। এতে গ্রাহক বিক্ষোভ হয়। তদন্তে জানা যায়, ওই শাখার চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মী চন্দন মণ্ডলের নেতৃত্বে ওই প্রতারণার ঘটনাগুলি ঘটেছে। ব্যাঙ্কের তরফে ইতিমধ্যে ওই অভিযুক্তের গাড়ি, বাড়ি, জমি বিক্রি করে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। প্রথমেই ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসার, কর্মী মিলিয়ে পাঁচজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে তাঁরা জেল হেফজাতে আছেন। পুলিশ জানতে পারে, ভল্ট থেকে নিয়মিত ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট বার করা হয়েছে। গ্রাহকদের থেকে টাকা নিয়ে তা ব্যাঙ্কে জমা না করে ওই ভুয়ো সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। |