স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ থাকলেও ফালাকাটা হাসপাতাল ‘গণধর্ষিতা’ তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করতে চায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিকেলে খয়েরবাড়ি পার্কের অদূরে ঘটনার পরে ওই তরুণীকে প্রথমে ফালাকাটা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখান থেকে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হস্তক্ষেপে রাতে বীরপাড়া হাসপাতালে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘালিয়া বলেন, “ফালাকাটা হাসপাতালে অনায়াসে ডাক্তারি পরীক্ষা হতে পারত। রাত পর্যন্ত বহু অনুরোধের পরেও কেন কর্তৃপক্ষ ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে চায়নি তা বোধগম্য হচ্ছে না। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।” ফালাকাটার তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারী বলেন, “গণধর্ষিতা হওয়া মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা ফালাকাটায় হওয়া উচিত ছিল। ধর্ষণের পর বেশি সময় পেরোলে রিপোর্ট ঠিক মত মেলে না। হাসপাতাল থেকে ফেরানোর ঘটনা অনভিপ্রেত। বিষয়টি নিয়ে আমি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।” পুলিশ জানায়, খয়েরবাড়ি জঙ্গলে হবু স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটা নাগাদ ওই যুবতীকে ৫ জন ধর্ষণ করে। রাত ৮টা নাগাদ ওই যুবতীকে ফালাকাটা হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁদের ওখানে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় না। কয়েক মাস আগে হাসপাতালে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ হয়েছে। অনায়াসে সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্ভব বলে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার জানান। কর্তব্যরত চিকিসকরা জানিয়ে দেন, স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ‘অন কল ডিউটি’তে নেই। প্রায় এক ঘণ্টা হাসপাতালে থাকার পরে ধর্ষিতাকে থানায় ফিরিয়ে নিয়ে আনা হয়। ওই রাতে আলিপুরদুয়ারে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে ডাক্তারি পরীক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে অফিসারদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়। পুলিশের কর্তারা শেষমেশ বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ফালাকাটা হাসপাতালের বদলে গভীর রাতে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার আশ্বাস দেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার। রাত সওয়া ১২টা নাগাদ অবশেষে ওই যুবতীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “ফালাকাটা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ডাক্তারি পরীক্ষা না করার ঘটনায় আমি দুঃখিত। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত ছিল।” |