শহরের উন্নয়ন কাজে গতি আনতে শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষকে গত মার্চ মাসে স্টেটাস রিপোর্ট তৈরি করে আলোচনায় বসার অনুরোধ করেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। কিন্তু চার মাস পরেও তা না হওয়ায় মেয়রের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মন্ত্রী। রাজীব আবাস যোজনা থেকে শুরু করে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযান, জল সরবরাহের গোলমাল প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুর কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় কার্যত হতাশ মন্ত্রী। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মন্ত্রী বলেন, “আমি বারবার উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করছি। অথচ তিনি পরিকল্পনা করে কোনও রকম আলোচনায় বসতে আগ্রহই দেখাননি। এ ধরনের উদাসীনতা উন্নয়নে শিলিগুড়িকে পিছিয়ে দেবে। শীঘ্রই পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে, প্রথমে স্টেটাস রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। এর পর শহরের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার আবেদন করলেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবে।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য বলেছেন, “স্টেটাস রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।” বস্তুত, বামেদের হঠিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট পুরসভায় ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই ক্ষমতাসীন জোটের কাউন্সিলরদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। দলের কাউন্সিলরদের কাছেও বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ নেন মন্ত্রী। এর পরেই তৃণমূল কাউন্সিলররা বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়ে মেয়রের কাছে দরবার করেন। অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করার ক্ষেত্রে পুরসভার অবস্থান কী? বস্তি উন্নয়নের কাজ বন্ধ হয়ে থাকা, শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কী ভাবা হচ্ছে এমন প্রায় গোটা দশেক প্রসঙ্গে মেয়রকে ৭ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলেন তাঁরা। সেই উত্তরে দলের কাউন্সিলররা অনেকেই সন্তুষ্ট নন বলেই তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর। রাজীব আবাস যোজনা প্রকল্পে পুরসভাকে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিও পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। তার পরেও মেয়র সে ব্যাপারে অন্ধকারে দেখে খুশি নন মন্ত্রী। বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা নিয়ে এক সময় মন্ত্রী নিজে একাধিক বৈঠক করেছেন মেয়রের সঙ্গে। অথচ মেয়র এখনও কোনও পরিকল্পনা করে আলোচনায় বসার ইচ্ছে প্রকাশ না করায় অসন্তুষ্ট গৌতমবাবু। সম্প্রতি অবৈধ নির্মাণ প্রসঙ্গে পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে কংগ্রেস-তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিরোধিতা নিয়েও উদ্বিগ্ন মন্ত্রী। শিলিগুড়িতে ফিরলে জোটের কাউন্সিলরদের নিয়ে তিনি এ ব্যাপারে বৈঠকে বসতে চান। |