রাজ্যের দুই প্রান্তে দুই অবস্থা!
জুনের অতিবৃষ্টিতে এক দফা বন্যা হয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে। ওই দু’টি জেলায় ফের অতিবৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আর দক্ষিণবঙ্গে? সেখানে ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনাই নেই বলে আবহবিদেরা জানিয়ে দিয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গে সোমবার রাত থেকে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ, বুধবারেও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বিচ্ছিন্ন ভাবে বৃষ্টি হবে। কিন্তু কাল, বৃহস্পতিবার থেকেই বৃষ্টি কমে অস্বস্তিকর আবহাওয়া ফিরে আসবে বলে আবহবিদেরা মনে করছেন।
এই মুহূর্তে দক্ষিণবঙ্গে যে-বৃষ্টিটার দরকার ছিল, তা হবে উত্তরের হিমালয় সংলগ্ন তিন জেলায়। অতিবৃষ্টিতে কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ফের অবনতি হতে পারে বলে আবহবিদদের আশঙ্কা। তাঁরা দার্জিলিং পাহাড়ে ধস নামার আশঙ্কাও করছেন। জেলা প্রশাসনগুলিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
বৃষ্টির এ-হেন উত্তর-দক্ষিণ ভেদাভেদ কেন? বঙ্গোপসাগরে থাকা ঘূর্ণাবর্তটি ঠিক কোথায় যায়, তার উপরে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি-ভাগ্য নির্ভর করছিল। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, সোমবার রাতেই ওই ঘূর্ণাবর্ত ঢুকে পড়েছে ওড়িশার স্থলভূমিতে। মঙ্গলবার সারা দিন ঘূর্ণাবর্তটি ছিল ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি। তার জেরেই সোমবার রাত থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে যতটা বৃষ্টি হলে ৪৫ শতাংশের ঘাটতি কাটতে পারত, ততটা হয়নি। আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভবনাও নেই বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, স্থলভূমিতে ঢুকে ঘূর্ণাবর্তটির দুর্বল হয়ে গেলেও তার অভিমুখ যে-দিকে, তাতে হিমালয় সংলগ্ন এলাকায় আজ, বুধবার থেকেই বৃষ্টি বাড়বে। এখানেই উত্তর ও দক্ষিণে পরিস্থিতির পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে।
একেই তো এ বার বর্ষা এসেছে দেরিতে। তার উপরে প্রথম থেকেই এ রাজ্যে বর্ষা এমন তুঘলকিপনা করতে থাকায় তার প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গে এবং উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ফসল মার খেয়েছে অনাবৃষ্টির জন্য। আর উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন তিন জেলায় চাষ মার খেয়েছে অতিবৃষ্টিতে। বন্যায় পাট ও ধানের ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে অনেক জায়গায় বীজতলায় চারা শুকিয়ে যাচ্ছে। কোচবিহার-জলপাইগুড়িতে মাঠে জল জমায় বহু ক্ষেত্রে পচে যাচ্ছে গাছের গোড়া। |