রাজস্থানে পাচার হয়ে যাওয়া এক বিধবা ও তাঁর মেয়েকে বাড়ি ফেরাল পুলিশ।
সোমবার দুপুরেই বাগমুণ্ডির একরা গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলা ও তাঁর মেয়েকে রাজস্থান থেকে বাগমুণ্ডিতে নিয়ে এসেছিল বাঘমুণ্ডি থানার পুলিশ। মঙ্গলবার মা-মেয়েকে পুরুলিয়া আদালতে হাজির করায় পুলিশ। দু’জনেই বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা বললে বিচারকের নির্দেশে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই মহিলাকে পাচার করার অভিযোগ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে রাজস্থানে গিয়ে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ওই অপরাধে জড়িত থাকায় পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছে।”
বলরামপুরের বাঘাডি গ্রামে বিয়ে হলেও স্বামীর মৃত্যু হওয়ার পরে একরা গ্রামে মায়ের কাছেই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ওই মহিলা। তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে জুন মাসের মাঝামাঝি কাজ দেওয়ার নাম করে রাজস্থানে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, বাঘমুণ্ডিরই গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত গোস্বামী নামে এক ব্যক্তি কাজ দেওয়ার নাম করে মা-মেয়েকে রাজস্থানে পাচার করেছিল। ওই বিধবার মায়ের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রথমে ধরে রঞ্জিতকে। তাকে জেরা করে পাচার চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় আরও চার জনকে। ধৃতদের মধ্যে তিন জন রাজস্থানের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিধবা মহিলা ও তাঁর মেয়ের সন্ধান পাওয়ার পরেই গত ২৬ জুন বাঘমুণ্ডি থানার ছ’জন পুলিশের একটি দল রাজস্থানের উদ্দেশে রওনা দেয়। রাজস্থানের ঝালোয়ার জেলার খানপুর থানার বদনখেরিয়া গ্রামে এক বাসিন্দার বাড়ি থেকে রাজস্থান পুলিশের সাহায্যে মা-মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। সোমবার দুপুরে তাঁদের বাঘমুণ্ডি থানায় নিয়ে আসা হয়। বিচারককে সূর্যমূখীদেবী জানিয়েছিলেন, মেয়েকে নিয়ে তিনি একরা গ্রামে মায়ের কাছে ফিরতে চান। ওই মহিলা জানিয়েছেন, রাজস্থানে যে ব্যক্তির কাছে তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি কার্যত ক্রীতদাসীর জীবনযাপন করতেন। তাঁকে ও মেয়েকে দিয়ে বাড়ির সমস্ত কাজ করানো হত। চলত নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন।
ওই মহিলার কথায়, “ভাগ্যক্রমে ফোনে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার বিষয়ে জানাতে পেরেছিলাম। না হলে বাকি জীবন সেখানেই দাসীর মতো থাকতে হত।” |