|
|
|
|
ভূমিক্ষয় এ বার ঠাঁই পাচ্ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয় তালিকায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
অসমের সব থেকে বড় সমস্যা ‘ভূমিক্ষয়’ এতদিনে দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তালিকায় ঠাঁই পেতে চলেছে। কাল বন্যা দেখতে আসা প্রধানমন্ত্রীকে অসমের এই গুরুতর সমস্যাটির বিষয়ে বিশদে জানান মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। আজ গগৈ দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তাঁকে আশ্বাসা দিয়েছেন যে খরা ও বন্যার মতো ভূমিক্ষয়কেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর ফলে, খরা ও বন্যার মতো এ বার থেকে ভূমিক্ষয়ে ক্ষতিগ্রস্তরাও কেন্দ্রীয় সাহায্য পাবেন। গগৈ এই সঙ্গেই জানান, ব্রহ্মপুত্রে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে চিন, বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে সঙ্গে নিয়ে চলা ছাড়া উপায় নেই।
বন্যা ও ধসে অসমে মৃতের সংখ্যা ৯৫ ছুঁয়েছে। নিখোঁজ ১৪ জন। প্রাণী মৃত্যুর সরকারি সংখ্যা ৯৪। গত কাল ঝটিকা সফরে অসমের বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। । মুখ্যমন্ত্রী গগৈ, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মেরামত ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ বাবদ কেন্দ্রের কাছে ১১,৩১৬ কোটি টাকা দাবি করেন। এরমধ্যে ২৫২৬ কোটি টাকা জরুরি ভিত্তিতে চাওয়া হয়েছে। গগৈ জানান, গত কয়েক দশকে, ভূমিক্ষয়ের ফলে রাজ্য সাড়ে ৪ লক্ষ হেক্টর জমি হারিয়েছে। বহু মানুষ নিস্ব হয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সাহায্য মেলেনি। এ বার প্রধানমন্ত্রী ভূমিক্ষয়কে জাতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তালিকায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন। তা হয়ে গেলেই, ভূমিক্ষয়ে বাড়ি-জমি হারানো মানুষও সরকারি প্রকল্পের সাহায্য পাবেন, যা এতদিন কেবল বন্যার ক্ষেত্রেই মিলত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে, কলম্বিয়ার আর্থ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে পাঁচ বছরের চুক্তি করা ছাড়াও, ইউএনডিপির সঙ্গেও অসমের বন্যা ও ভূমিক্ষয় নিয়ে বৈঠক করেনমুখ্যমন্ত্রী গগৈ।এ দিন গগৈ বলেন, “বন্যার আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করাতে গেলে মেঘালয়, অরুণাচল ও অসমের আবহাওয়া দফতরের পরিকাঠামো অবিলম্বে উন্নত করতে হবে। সব ক’টি নদীকে ‘ডপলার রাডার’, স্বয়ংক্রিয় ‘ওয়েদার স্টেশন’ ও ‘রিমোট সেনসিং’ নেটওয়র্কের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। কেন্দ্রের উচিত বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়ে এই দেশগুলির সঙ্গে আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানের ব্যবস্থা করা।”
ব্রহ্মপুত্রে পলি তোলা ও ব্রহ্মপুত্র ও তার উপনদীগুলির মধ্যে খাল কেটে জলের প্রবাহে সমতা আনার প্রস্তাব দেন গগৈ। তিনি বলেন, “ব্রহ্মপুত্র যে হেতু ভারতের পাশাপাশি একাধিক দেশের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সে হেতু সেই দেশগুলির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ না করলে, নদের উপরে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়।”
এ দিকে, অরুণাচলের অর্থ, পরিকল্পনা ও পূর্তমন্ত্রী চউনা মেইন ও অসমের সংসদীয় সচিব বলিন চেটিয়া অসম-অরুণাচল সীমানার নোয়া ডিহিং ও পদুম নালা উপত্যকা, মহাদেবপুর, ধর্মপুর, নামসাই ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন। মেইন জানান, অসম ও অরুণাচল একসঙ্গে এই এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করবে। |
|
|
|
|
|