|
|
|
|
|
বাম প্রকল্প বাতিল, আলিপুর
থেকে সরছে না চিড়িয়াখানা
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
চিড়িয়াখানা নিয়েও বাম জমানার পরিকল্পনা খারিজ করে দিল রাজ্যের নতুন সরকার। আলিপুর চিড়িয়াখানা সরছে না বলে মঙ্গলবার মহাকরণে জানিয়ে দিয়েছেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন।
আলিপুর চিড়িয়াখানার শহুরে পারিপার্শ্বিক এবং চার দিকের অট্টালিকা জীবজন্তুর জীবনযাপনের পক্ষে মোটেই সহায়ক নয়। তাই ওখান থেকে কোনও খোলামেলা জায়গায় চিড়িয়াখানা সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে একাধিক বার অনুরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আলিপুর চিড়িয়াখানায় অল্প জায়গায় যে-ভাবে অনেক বেশি জীবজন্তু রাখা হয়েছে, তা-ও আদর্শ ও আধুনিক চিড়িয়াখানার মানদণ্ডের সঙ্গে খাপ খায় না বলে অভিমত দেন তাঁরা।
কেন চিড়িয়াখানা সরাচ্ছে না রাজ্য?
বনমন্ত্রী এ দিন বলেন, দূর থেকে অনেক মানুষ কলকাতায় আসেন শুধু চিড়িয়াখানা দেখতে। স্থানান্তর না-করে আলিপুর চিড়িয়াখানাকেই আরও উন্নত করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। দর্শকেরা যাতে আরও ভাল ভাবে চিড়িয়াখানায় জীবজন্তু দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার সোনারপুরের কাছে ভগবানপুরে নতুন চিড়িয়াখানা করার যে-প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, নতুন সরকার সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন হিতেনবাবু। তিনি জানান, তাঁরা ক্ষমতায় এসেই বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন। পর্যালোচনায় দেখা যায়, বামফ্রন্ট সরকার জমি অধিগ্রহণ না-করেই ওই পরিকল্পনা করেছিল। তাই ওই প্রকল্পে আর এগোনো যাচ্ছে না।
একই সঙ্গে মন্ত্রী অবশ্য জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝড়খালিতে যে-ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, সেখানে বাঘেদের জন্য নির্দিষ্ট ঘেরা এলাকার বাইরে অনেকটা ফাঁকা জায়গা থাকবে। সেই জায়গাটাও প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। যদি দেখা যায় যে, আলিপুর চিড়িয়াখানায় জায়গার অভাব হচ্ছে, তা হলে ভবিষ্যতে সেখান থেকে কিছু জীবজন্তুকে ঝড়খালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হবে। ঝড়খালি প্রকল্পের ৬০ শতাংশের মতো কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।
বনমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ দেশের সব চিড়িয়াখানা থেকে হাতিদের সরিয়ে দেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানাচ্ছেন। এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। এ রাজ্যে একমাত্র আলিপুর চিড়িয়াখানাতেই তিনটি হাতি রয়েছে। কিন্তু বন দফতর সেখান থেকে হাতি সরানোর প্রস্তাবে রাজি হয়নি। কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে, আলিপুর চিড়িয়াখানায় দর্শকদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে হাতি অন্যতম মূল আকর্ষণ। তবে দর্শকদের বিনোদনই সব নয়। আলিপুর চিড়িয়াখানাকে অসুস্থ হাতিদের পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবেও কাজে লাগানো হয়।
ইতিমধ্যে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার আকর্ষণ আরও বেড়েছে দাবি করেন বনমন্ত্রী। তিনি বলেন, সম্প্রতি সেখানে তুষার-চিতা ঋতু-প্রভাতের একটি বাচ্চা হয়েছে। সেখানে ভূমিষ্ঠ হয়েছে একটি লাল পান্ডাও। শাবক দু’টিকে চিড়িয়াখানার প্রজনন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারিতে। চিড়িয়াখানায় তিন জোড়া নীল ভেড়া মুন-ভেনাস, নীল-নিক্কি এবং বান্টি-বাবলির সম্প্রতি একটি করে বাচ্চা হয়েছে। ২০০৮ সালে জাপানের ওকিনাওয়া থেকে দু’টি পুরুষ ও দু’টি মেয়ে নীল ভেড়া আনা হয়েছিল এই চিড়িয়াখানায়। এখন এখানে নীল ভেড়ার সংখ্যা হল ১১। |
|
|
|
|
|