ফুলঝোড়ের এক কিশোরীকে ফুসলিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। তবে ওই নাবালিকার বাবা দুর্গাপুরের এনটিপিএস থানার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। এডিসিপি-কে বিষয়টি জানানোর পরে তারা অভিযোগ নেয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও থানা ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ এপ্রিল স্থানীয় বি-ওয়ান মোড়ে প্রাইভেট টিউশন পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। তার বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। তাঁর অভিযোগ, মাস দুয়েক আগে ফুলঝোড়ের দুই বাসিন্দা ওই কিশোরীর সঙ্গে তাঁদের এক আত্মীয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু মেয়ের বয়স এখনও ১৮ বছর হয়নি জানিয়ে তিনি তাঁদের ফেরত পাঠান। তাঁর দাবি, “আমি পাড়ার লোকজনের কাছে জেনেছি, ওই দু’জন আরও দু’তিন জনকে সঙ্গে নিয়ে আমার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সে কথাই থানায় লিখিত ভাবে জানাতে যাই।” তাঁর অভিযোগ, “পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়। অশালীন কথাবার্তা বলে।” পরের দিন ফের তাঁরা থানায় গেলেও অভিযোগ দায়ের করতে পারেননি। নিখোঁজ ডায়েরি করে ফিরে আসেন।
ইতিমধ্যে একটি সূত্রে কিশোরীর বাবা জানতে পারেন, গদাধর রায় নামে নবদ্বীপের এক যুবক তাঁর মেয়েকে নিয়ে গিয়েছে। দুই পুলিশকর্মীকে নিয়ে তিনি নবদ্বীপে যান। কিন্তু মেয়ের খোঁজ মেলেনি। গত ১ মে এডিসিপি-র (পূর্ব) কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান তিনি। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার পুলিশ ওই কিশোরী ও গদাধরকে দুর্গাপুরেরই এমএএমসি কলোনির একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। তাদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক গদাধরকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। মেয়েটিকে তুলে দেওয়া হয় তার বাবার হাতে। কিশোরীর বাবার বক্তব্য, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গদাধর অন্ধ্রপ্রদেশে কোনও সোনার দোকানে কাজ করে। নবদ্বীপের সঙ্গে তার সম্পর্ক বর্তমানে সামান্যই। আমার মেয়েকে ও বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু মনে হয়, ওর অন্য কোনও ধান্দা ছিল।”
যে দু’জনের কথা কিশোরীর বাবা প্রথম থেকে বলে আসছেন, এ দিন নতুন করে তাঁদের বিরুদ্ধেও এনটিপিসি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। এডিসিপি (পূর্ব) শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |