|
|
|
|
কর্মীর অভাব, মহিলা থানা গড়তে সমস্যা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বারুইপুরে ‘মহিলা থানা’ গড়তে গিয়ে জেরবার হচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কর্তারা।
একেই জেলায় মহিলা পুলিশের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যাঁরা আছেন, তাঁদের অধিকাংশই পুলিশ লাইনে কিংবা পুলিশ সুপারের অফিসে কাজ করেন। মহিলা থানার জন্য এক রকম বাধ্য হয়ে তাঁদেরই থানায় নিয়োগ করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তিন জন এস আই, এক জন এ এস আই এবং ১০ জন কনস্টেবল নিয়ে মহিলা থানার কাজ চালু হবে। এক পুলিশকর্তা বলেন, বারুইপুর মহকুমার থানাগুলিতে প্রতি দিন গড়ে সাত-আটটি করে মহিলাদের প্রতি অত্যাচার সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়। এত কম পুলিশ নিয়ে কত দিনে ওই সব মামলার তদন্ত শেষ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে পুলিশকর্তারাই।
বারুইপুরে মহিলা থানা চালু করতে গিয়ে গোদের উপরে বিষফোঁড়া হয়েছে, থানার বাড়ি ভাড়া নেওয়ার জন্য সরকারি ‘রেট’। ওই রেট অনুযায়ী, প্রতি বর্গফুটের জন্য সরকার দেয় ১০ টাকা করে। কিন্তু ওই টাকায় বারুইপুরে কেউই বাড়ি ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছেন না। তাই কোথায় থানা তৈরি করা হবে, তা নিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন পুলিশকর্তারা।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, দিন তিনেক আগে মহাকরণ থেকে নির্দেশ জারি হয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর মহকুমায় জেলার প্রথম মহিলা থানা চালু করতে হবে। আপাতত ভাড়া বাড়িতেই ওই থানা চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন মহিলা থানার অধীনে থাকবে বারুইপুর মহকুমার বারুইপুর, সোনারপুর, জয়নগর, কুলতলি, মৈপীঠ উপকূল থানা। ওই সব এলাকায় বধূ নির্যাতন ও মহিলা সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার তদন্তের দায়িত্ব মহিলা থানাকে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, মহিলা থানার জন্য নতুন করে কোনও কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। সোনারপুর, বারুইপুর, মহেশতলা, জেলা গোয়েন্দা দফতর, জেলা আদালত থেকে মহিলা পুলিশকর্মীদের জরুরি ভিত্তিতে মহিলা থানায় নিয়োগ করার নির্দেশ জারি করেছেন পুলিশকর্তারা। শহরতলির কয়েকটি থানা থেকে পুলিশের গাড়ি তুলে মহিলা থানায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই বাড়ি ও বাকি পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে।” কিন্তু, এই অল্প সময়ের মধ্যে কী করে এই কাজ করা যাবে, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না পুলিশকর্তাদের একটা বড় অংশ। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী অবশ্য বলেন, “আমরা এ বিষয়ে সমস্ত রকম ব্যবস্থা করছি।”
জেলা পুলিশকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং নতুন কর্মী নিয়োগ না করে তড়িঘড়ি মহিলা থানা চালু করতে গেলে অন্য অসুবিধাও দেখা দেবে। যে সব থানা বা দফতর থেকে কর্মীদের বদলি করে মহিলা থানায় পাঠানো হবে, সেই সব থানা বা দফতরের পরিকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। মহিলা অফিসার না থাকায় বিভিন্ন থানায় জমে থাকা বধূ নির্যাতনের পুরনো মামলার তদন্তেও ঢিলেমি দেখা দেবে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। ঠিক সময়ে তদন্ত-রিপোর্ট আদালতে জমা না পড়লে আদালত অবমাননার কোপে পড়তে পারেন তদন্তকারী মহিলা অফিসারেরা। |
|
|
|
|
|