সব স্তরে কর্মিসভা
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে পূর্বে তৎপর তৃণমূল
লদিয়া পুরভোটে হার থেকে ‘শিক্ষা’ নিতে চাইছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামের জেলায় দলের কোন্দল মিটিয়ে নিয়ে ‘দুর্গ’ অটুট রাখতে তৎপর হয়েছেন জেলায় শাসকদলের ‘মুখ’ সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার তমলুকে এক কর্মিসভায় তেমনই বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু।
ডিমারি হাইস্কুলের সভাঘরে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই শুভেন্দু দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর উদ্দেশে বলেন, “যে সব স্থানীয় নেতা-কর্মী দল থেকে দূরে থাকছেন, তাঁদের উপযুক্ত সম্মান দিয়ে কাছে টানতে হবে। দলের বিভিন্ন কমিটিকে কার্যক্রমে যুক্ত করতে হবে। সর্বোপরি দলকে ঐক্যবদ্ধ ও মজবুত করতে হবে।”
পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক ব্লকে দলীয় দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। তবে এতদিন তা সামলাতে বিশেষ তৎপরতা দেখাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তার পরিণাম যে কী হতে পারে, হলদিয়া পুর-নির্বাচনে পরাজয়ই তা দেখিয়ে দিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব স্বীকার করেছেন, পুরভোটের মুখে হলদিয়ার বিধায়ক শিউলি সাহার সঙ্গে সাংসদ শুভেন্দুর বিরোধ দলের বিপক্ষে গিয়েছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেখানেই প্রথম রাজ্য জুড়ে শাসক-তৃণমূলের ‘পরীক্ষা’ জনতার দরবারে। আর পূর্ব মেদিনীপুরে ২০০৮ থেকে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলের বিচার করবেন জেলাবাসী। তার আগে জেলায় কোন্দল প্রসূত সব রকম ফাটল মেরামত করে নিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জোর দেওয়া হচ্ছে দলের মধ্যে ঐক্যমত্য গড়ে তোলার ব্যাপারে। সেই লক্ষ্যে জুলাই মাস জুড়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্লকে ব্লকে বৈঠক করার কথা ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদ তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “ব্লক, পঞ্চায়েত ও বুথ স্তরে দলীয় ঐক্য মজবুত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূলের দলীয় সূত্রের খবর, যে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে দল ক্ষমতাসীন, সেখানকার কাজের খতিয়ান নেওয়া থেকে স্থানীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব মেটাতে এখন থেকে নিয়মিত বৈঠক করবেন জেলা স্তরের নেতারা। ব্লক, পঞ্চায়েত স্তরে যে সব নেতা-কর্মী উপেক্ষিত হয়েছেন, বা দ্বন্দ্বের জেরে নিষ্ক্রিয় থেকেছেনতাঁদের গুরুত্ব দিয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা হবে। তবে দলেরই একাংশের মতে, এই জেলায় গত ৪ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। তবে এতদিন এ নিয়ে নেতৃত্বের টনক নড়েনি। আবার পঞ্চায়েত ভোট কাছে আসতেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেছেন। ফলে, এই পদক্ষেপ বিক্ষুব্ধরা কী ভাবে নেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। জেলার তৃণমূল নেতাদের আরও বক্তব্য, জন্মলগ্ন থেকে প্রতিবারই তৃণমূল কারও না কারও সঙ্গে জোট বেঁধে ভোটের ময়দানে নেমেছে। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবশ্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে এখন থেকেই অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে একক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। আর সে পথে সামান্য গোষ্ঠী-কোন্দলও বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে। রাজ্যে ‘পরিবর্তনের আঁতুড়ঘর’ নন্দীগ্রামেও তৃণমূল এখন দ্বন্দ্বে জর্জরিত। শেখ সুফিয়ান ও আবু তাহের গোষ্ঠীর বিরোধ মেটাতে ‘জমিরক্ষা আন্দোলনে’র ‘অস্ত্র’ই ফের ব্যবহার করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শুভেন্দুর উপস্থিতিতে সম্প্রতি নন্দীগ্রামে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে সভা তারই প্রমাণ দিয়েছে। এই ভাবে জেলার অন্যত্রও দলীয় ঐক্য স্থাপনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই পথে দ্বন্দ্ব মেটে কি না, সেটাই এখন দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.