মহিলা ও তার মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে এক দল গ্রামবাসীর রোষের শিকার হল পুলিশ। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে মালদহের কালিয়াচক থানার মোথাবাড়ির আকন্দবেরিয়া গ্রামে। ওই মহিলা ‘দুশ্চরিত্র’ দাবি করে গ্রামের কিছু লোক বাড়ি ঘিরে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। পুলিশ সেখানে গেলে বাসিন্দারা পুলিশের উপরেই হামলা করে। গ্রামবাসীদের ছোড়া ঢিলে ৫ পুলিশ কর্মী জখম হন। পরে কালিাচক ও মালদহ থেকে পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৫ মহিলা-সহ ২১ জনকে গ্রেফতার করে। রাতে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা মহিলার বাড়িতে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতে পাঠান। আতঙ্কিত ওই মহিলা সপরিবার অন্য একটি গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “ওই মহিলাকে দুশ্চরিত্র অপবাদ দিয়ে প্রায় দুশো লোক বাড়ি ঘিরে ফেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করলে পুলিশ সেখানে যায়। গ্রামের লোকেরা পুলিশের উপরেই হামলা করে বসেন। বার বার বলার পরেও কেউই ওই মহিলার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিতে রাজি হননি। উল্টে নিজেরাই মহিলার বিচার করবেন দাবি করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন। পরে বাড়তি ফোর্স নিয়ে গিয়ে ২১ জনকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।” মোথাবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ দেবব্রত চক্রবর্তী জানান, হামলার অভিযোগে ৮৫ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামীর নাম ঘুরন মণ্ডল। এলাকায় তাঁর একটি মিষ্টির দোকান আছে। বছর তিনেক হল তিনি আকন্দবেরিয়ায় বাড়ি করে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন। ঘুরনবাবুর অভিযোগ, বাড়ি করার পর থেকেই কিছু যুবক তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে উত্যক্ত করত। স্ত্রী ও মেয়ে এর প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কিছু লোক তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামে অপবাদ দিতে শুরু করে। বাড়িতে মধুচক্র বসানো হয় বলে রটিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার রাতে কিছু মদ্যপ যুবক তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। |