কুপ্রস্তাবে আপত্তি জানানোয় হেনস্থা |
চিকিৎসকের নামে নালিশ চিকিৎসকের |
মহিলা চিকিৎসককে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সহকর্মী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। পুরুষ সহকর্মীর প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রতিনিয়ত তাকে মানসিক হেনস্থার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর। মহিলা সহকর্মীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করায় তাঁকে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। চাঁচলের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন বিশ্বাস বলেছেন, “মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই চিকিৎসকের মধ্যে আত্মীয়তাও রয়েছে। তাঁদের বাড়িও একই এলাকায়। অভিযোগ যখন উঠেছে তখন সমস্ত কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মশালদহে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিএমওএইচ ছাড়াও রয়েছেন দুই চিকিৎসক মিল্টন মন্ডল ও মৌমিতা কবিরাজ। ৩৪ বছর বয়সী মিল্টন মন্ডল ৪ বছর আগে ও বছর সাতাশের মৌমিতা দেবী ডাক্তারি পাশ করার পরে এক বছর আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দেন। দুজনেরই বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায়। পাশাপাশি বাড়ি। দুই চিকিৎসকের মধ্যে দূর সম্পর্কের আত্মীয়তাও রয়েছে। মশালদহে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছাকাছি পৃথক ভাড়াবাড়িতে থাকেন অবিবাহিত দুই চিকিৎসকই। সম্প্রতি চিকিৎসক মিল্টন মন্ডল স্বাস্থ্য দফতরের কাছে মৌমিতা দেবীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ জানান। এরপরই শুক্রবার মৌমিতা দেবীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরে হইচই পড়ে যায়। শনিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছুটে যান সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। দুই চিকিৎসকে নিয়ে তিনি আলোচনায় বসলেও তার সামনেই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দুই চিকিৎসকই হইচই বাধিয়ে দেন। মৌমিতাদেবী বলেন, “পরিচিতি ছাড়াও দূর সম্পর্কের আত্মীয়তা থাকায় মিল্টনবাবুর ভরসায় এখানে চাকরি করতে আসি। অথচ উনি যে এতবড় শত্রু হয়ে উঠবেন তা ভাবতেই পারছি না। একাধিকবার খারাপ প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এখানে কাজ করতে এসেছি। কাজের পরিবেশটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়েই স্বাস্থ্য দফতরকে বিস্তারিত জানিয়েছি।” মিল্টনবাবুর পাল্টা দাবি, “মৌমিতা দেবী প্রত্যেকের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করেন। স্বাস্থ্য দফতরে সেই অভিযোগ জানানোর পরে এখন মিথ্যা বদনাম করে ফাঁসানোর চক্রান্ত হচ্ছে।” মৌমিতা দেবীর অভিযোগ, আউটডোরে পৌঁছতে দেরী হওয়ায় মিল্টনবাবু বাসিন্দাদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তা ছাড়া বাইরে তার নামে কুৎসা রটানো হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। সম্প্রতি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। মিল্টন মন্ডল ভাড়া বাড়ি ছেড়ে আবাসনে উঠলেও নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে পাশাপাশি ওই আবাসনে থাকতে মৌমিতা দেবী অস্বীকার করেন। তাঁর আশঙ্কা, কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই চিকিৎসক তাঁর ক্ষতি করতে পারেন। |