| অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
| জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার সরকারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর দফতরের বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী জলপাইগুড়ি পুরসভা ‘সি’ শ্রেণীতে পড়ছে। কোনও পুরসভাকে কর্পোরেশনের মর্যাদা দিতে গেলে প্রথমে সেটিকে ‘বি’ শ্রেণীভুক্ত হওয়ার শর্ত পূরণ করতে হবে। সে কথা মাথায় রেখেই জলপাইগুড়ি পুরসভা যাতে ‘বি’ শ্রেণীর মর্যাদা পায় সেই মতো প্রশাসনিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের তরফে বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভাকে ‘বি’ শ্রেণীভুক্ত হতে হলে নতুন বেশ কিছু এলাকা সংযোজন করে আয়তন বাড়াতে হবে। জেলাশাসকের দফতর থেকে পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে শহর লাগোয়া পঞ্চায়েতের কোনও জায়গাগুলি জলপাইগুড়ি পুরসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার তরফে প্রাথমিক ভাবে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, শহর লাগোয়া পাহাড়পুর, পাতকাটা, অরবিন্দ, খড়িয়া ও মন্ডলঘাট এই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের শহর লাগোয়া এলাকাগুলি পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কোন কোন এলাকা জলপাইগুড়ি পুরসভার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে সেই তালিকা পুরসভাকে পাঠানো হয়েছে। তাতে একটি সম্পূর্ণ মৌজা ও দুটি মৌজার অংশ বিশেষের উল্লেখ রয়েছে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ইন্দিরা গাঁধী কলোনি, ভগত সিংহ কলোনি, টুপামারি, বালাপাড়া, পাতকাটা-সহ সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ যেখানে রয়েছে সেই এলাকাও রয়েছে। খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি তালিকাও পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “জেলাশাসকের দফতর থেকে চিঠি পেয়ে শহর লাগোয়া পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সব কটি পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জবাব মিললে একসঙ্গে তা জেলা প্রশাসনকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এটা বলতে পারি, জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।” জলপাইগুড়ি পুরসভাকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার দাবি অবশ্য দীর্ঘদিনের। বছর দু’য়েক আগে জলপাইগুড়ি পুরসভা মাসিক বৈঠকে কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়। সরকারি ভাবে সেটাই কর্পোরেশনের প্রথম প্রস্তাব। এর পরে গত দু’বছরে বিষয়টি নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দফতরে চিঠির আদানপ্রদান শুরু হয়। এ বিষয়ে শেষ চিঠি পুরসভার কাছে আসে চলতি বছরের ১৯ জুন। সেই চিঠিতে পুরসভায় সংযুক্তি হতে পারে লাগোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সম্ভাব্য এলাকাগুলির তালিকা দ্রুত জমা দিতে বলা হয়েছে। পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, কর্পোরেশন ঘোষণা হলে এক দিকে যেমন আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের নিকাশি, রাস্তা সম্প্রসারন, জঞ্জাল সমস্যা সহ অনান্য সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে, তেমনই নগরায়ণের প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে এগোবে। সেই সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের যে এলাকাগুলি পুরসভায় সংযুক্তি ঘটবে সেখানে পুর পরিষেবা পৌঁছবে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এখনও তাদের কোন এলাকা পুরসভায় সংযুক্তি ঘটবে তার তালিকা পাঠায়নি। দ্রুত সেই তালিকা দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছি। দেখা যাক কত তাড়াতাড়ি কাজটা করানো যায়।” |
