লড়াইয়ের স্বীকৃতি দিল এসজেডিএ
ত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরের সেই সন্ধ্যার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিউলি দত্ত। সে দিন ভূমিকম্পের সময়ে নিজের জীবনের কথা ভুলে গিয়ে এক রোগীকে বাঁচাতে খাট আগলে রেখেছিলেন তিনি। রবিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়িতে বন দফতরের একটি ট্যুরিস্ট লজে তাঁর হাতে স্মারকপত্র তুলে দিল শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। শুধু শিউলিদেবী নন, শিলিগুড়ির মহকুমা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের যে সব কর্মী ও নার্স জীবন বাজি রেখে ভূমিকম্পে জখম বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এগিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের ৩৮ জনের হাতে স্মারকপত্র তুলে দেওয়া হয় এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে। সংস্থার চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “ভূমিকম্পের সে দিনের কথা কারও পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়। মানুষের কান্না আমি দেখেছি। সেই সময় নার্স, টেকনিশিয়ান-সহ হাসপাতাল, নার্সিংহোমের কর্মীরা জখমদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের বাঁচাতে যে লড়াই করেছেন তা অভাবনীয়। আমরা সবাইকে সংবর্ধনা দিতে পারলাম না। কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বেছে সংবর্ধনা দিলাম। মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়াবেন, এটাই আমরা চাই। এসজেডিএ শুধু ভবন বানায় না, মানুষের উন্নয়নের পাশে দাঁড়ায়।”
—নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ ভূমিকম্পের সেই দিন শিলিগুড়ি তো বটেই গোটা দার্জিলিং জেলার মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েন। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থল সিকিমের মঙ্গনের বাসিন্দারা। পরদিন সকাল থেকে সেনা বাহিনীর জওয়ানরা হেলিকপ্টারে একের পর এক জখম মানুষকে মঙ্গন থেকে শিলিগুড়িতে নিয়ে আসেন। সেনা বাহিনীর বেঙডুবি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা হয়। অনেককে আবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। রুদ্রবাবু জানান, অনেকের মাথায় চোট ছিল। অনেকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। জখম মানুষদের যাতে সুস্থ করে তোলা যায় সে জন্য সেদিন লড়াই শুরু করেন নার্স, চিকিৎসকরা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সিস্টার লতিকা মণ্ডল জানান, সেদিন তিনি দু’ঘন্টা বেশি কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “একের পর এক যখন জখমরা আসছেন, তাঁদের জন্য মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। চিকিৎসক-সহ অন্যান্য সমস্ত বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কীভাবে তাঁদের ভাল করে তোলা যায় তার বাইরে কোনও চিন্তা করতে পারিনি। অনেককেই সুস্থ হয়েছেন। সেদিনের কথা চিন্তা করলে চোখে জল চলে আসে।” সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমের নার্স শিউলি দেবী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে মঞ্চে উঠে কাঁদতে শুরু করেন। তিনি বলেন, “নিজে ভয় পেয়েছিলাম। তবু রোগীকে বাঁচিয়ে রাখার বাইরে কোনও কথা ভাবিনি। এখন ভাবলে চোখে জল চলে আসে।” এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার, শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার-সহ বেসরকারি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের হাতেও স্মারক দেন এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রুদ্রনাথ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.