|
|
|
|
মুখ্যমন্ত্রীর বাজার সফরকে বিঁধল কংগ্রেস-সিপিএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও কৃষ্ণনগর |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজার-পরিদর্শনকে প্রায় একই সুরে আক্রমণ করল সরকারের শরিক কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির কটাক্ষ, শুধু বাজারে ঘুরলেই জিনিসপত্রের দাম কমবে না। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, আড়তদারদের মাধ্যমে জিনিসপত্র মজুত করিয়ে রেখে দাম বাড়ানোর ‘চক্রান্ত’ সত্যিই যদি কেউ করে থাকে, তা হলে ‘রং না-দেখে’ মুখ্যমন্ত্রী তাদের ‘খোঁয়াড়ে ঢুকিয়ে দিন’!
কলকাতার বেশ কয়েকটি বাজারে শনিবার আচমকা হানা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর দিনই কৃষ্ণনগরের ভাতজাংলায় দলীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস নেত্রী দীপা বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাজারে ঘুরছেন। কিন্তু বাজারে ঘুরলেই দাম কমবে না। চাষিরা সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন না। দাম বাড়াচ্ছে ফড়েরা। এর দায় সরকারের, মুখ্যমন্ত্রীর।” তাঁর বক্তব্যে এ দিন প্রত্যাশিত ভাবেই জোটসঙ্গী তৃণমূলকে বারংবার আক্রমণ করেছেন দীপা। তাঁর অভিযোগ, “সহায়ক মূল্য বেশি পাওয়া সত্ত্বেও চাষিরা সরকারের কাছ ধান বিক্রি করেননি। কারণ তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের বলেছেন, ‘ওখানে গেলে চেক পাবি আমাকে দে, পাঁচশ’ টাকা নগদ দেব।’ চাষিরা তাই বাধ্য হয়ে কম টাকায় তাঁদেরই ধান বিক্রি করেছেন।” |
|
ভাতজাংলায় দলীয় সম্মেলনে দীপা দাশমুন্সি ও শঙ্কর সিংহ। —নিজস্ব চিত্র |
মুখ্যমন্ত্রী শুধু বাজারে ঘুরলেই যে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে না, সে কথা এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন বিমানবাবুও। আলিমুদ্দিনে প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে। বিমানবাবুর মতে, খাদ্যপণ্যের আগাম বাণিজ্যে ছাড় দেওয়ার জন্য কেন্দ্র দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দায় থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী শনিবার ইঙ্গিত করেছিলেন, আড়তদারদের কাজে লাগিয়ে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার ‘চক্রান্ত’ করছে সিপিএম! তার প্রতিক্রিয়ায় বিমানবাবু বলেন, “সত্যিই যদি এ রকম চক্রান্ত কেউ করে থাকে, মুখ্যমন্ত্রী তা হলে তাদের খোঁয়াড়ে ঢুকিয়ে দিন! রং-দল-মত না-দেখে তাদের গ্রেফতার করুন! শস্তা হাততালি কুড়োনোর কথা না-বলে ব্যবস্থা নিন!”
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের শরিক-বিরোধী সুর মিলে গেলেও তৃণমূলকে সিপিএমের ‘বি টিম’ বলে কটাক্ষ করেন দীপা। তাঁর মন্তব্য, “লোকসভায় সিপিএমের সঙ্গে একই সুরে কথা বলছে ওরা। তা হলে সিপিএমের বি টিম কে? তৃণমূল!” রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের অবস্থান সম্পর্কেও তাঁর বক্তব্য, “প্যাকেজ পাননি বলে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করবেন না বলছেন। প্রণববাবুর রাষ্ট্রপতি হওয়া বাংলার মানুষের কাছে গর্বের। তিনি এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, কী করবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে শপথ নেবেন অথচ ভোট দেবেন না, এটা অগণতান্ত্রিক!” রাজ্য ‘ব্যর্থ’ বলেও দাবি করেন দীপা। পঞ্চায়েতে কংগ্রেস একাই লড়তে চায়, এ দিনের সম্মেলনেও তা জানিয়ে দীপা বলেন, “কংগ্রেস পঞ্চায়েত ভোটে একাই লড়বে। তার জন্য প্রস্তুত হোন।” তাঁর বক্তব্য, “প্রদেশ কংগ্রেস পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবেন জেলা নেতৃত্ব।” ওই সম্মেলনেই নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ বলেন, “ভোট যাতে ভাগ না হয়, তার জন্য প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি গত পঞ্চায়েত ভোটে জোটের কথা বলেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী জোট তো করেনইনি। বরং জোট করলে তাঁকে দল থেকে বার করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন! তা হলে প্রশ্ন, কারা সে দিন সিপিএমকে হারাতে চেয়েছিল?” |
|
|
|
|
|