অভিযুক্ত তৃণমূল
জগৎবল্লভপুরের পঞ্চায়েতে প্রধানের সই জালের নালিশ
কটি সেতু তৈরিকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধানের সই জাল করে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেস-তৃণমূলের এই বিবাদের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেতু তৈরির প্রাথমিক কাজ। ঘটনাটি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের মাজু গ্রাম পঞ্চায়েতের।
এই এলাকার উত্তর মাজুতে কানা দামোদর নদীর উপরে দীর্ঘদিনের পুরনো কাঠের সেতুটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সেচ দফতর সেতুটি পাকা করার সিদ্ধান্ত নেয়। দফতর সূত্রের খবর, পাকা সেতু তৈরির আগে তারা সপ্তাহখানেক আগে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নিয়মানুযায়ী মাটি পরীক্ষা করতে পাঠায়। কিন্তু ওই সংস্থার কর্মীরা মাটি পরীক্ষা করতে এলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। ফলে মাটি পরীক্ষার কাজটি ভণ্ডুল হয়ে যায়। ফিরে যান বিশেষজ্ঞ সংস্থার কর্মীরা। পরে সেচ দফতরের কাছে বিক্ষোভকারীরা একটি স্মারকলিপি দেন। এতে যাঁরা সই করেছিলেন তাঁদের মধ্যে নাম ছিল মাজু পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান নীলোৎপল করের। সই-এর পাশে প্রধানের স্ট্যাম্পও মারা ছিল।
মাটি পরীক্ষার কাজ কেন বন্ধ হল, তা জানতে নীলোৎপলবাবু সেচ দফতরের আমতা সাব ডিভিশন কার্যালয়ে যান। সেখানে গেলে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে তাঁকে স্মারকলিপিটি দেখানো হয়। স্মারকলিপিতে তাঁর সই রয়েছে দেখেই প্রতিবাদ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “উত্তর মাজুতে সেতু তৈরির জন্য গ্রামবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন। সেই দাবিটি সুপারিশ করে আমিই সেচ দফতরের কাছে পাঠায়। কিন্তু পরবর্তীকালে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কাজটি বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে যে স্মারকলিপিটি দেওয়া হয়েছে তাতে দেখলাম আমারও সই রয়েছে। এটা পুরোপুরি জালিয়াতি। সঙ্গে সঙ্গে আমি সেচ দফতরে লিখিত ভাবে প্রতিবাদ জানাই। সাফ জানিয়ে দিই আমার সই জাল করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এই কাজ করেছেন আনন্দ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তৃণমূলের-ই একাংশ।”
মাজুর তৃণমূল নেতা আনন্দ ভট্টাচার্য অবশ্য জানান, নীলোৎপলবাবু স্মারকলিপিতে সই করে পরে দলের চাপে তা অস্বীকার করছেন। তিনি বলেন, “উত্তর মাজুতে কাঠের সেতুটি পাকা করার জন্য শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংসদ কোটা থেকে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন। সেচ দফতরের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি, ঠিক পাশেই সন্তোষবাটিতে কানা দামোদরের উপরে একটি জীর্ণ সেতু রয়েছে। উত্তর মাজুতে যেহেতু সাংসদ কোটার টাকা এসে গিয়েছে তাই এই সেতুটিতে হাত না-দিয়ে তারা বরং সন্তোষবাটির সেতুটি মেরামত করুক। এই দাবিতে সেচ দফতরকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। যে সব গ্রামবাসী স্মারলিপিটি সই করিয়েছিলেন তাঁদের আমি বলেছিলাম, তাতে যেন মাজুর প্রধানেরও সই করানো হয়। আমার মনে হয়, দলের নেতাদের চাপে পড়েই প্রথমে সই করে পরে তা অস্বীকার করছেন তিনি।”
কংগ্রেস অবশ্য দলীয় প্রধানের সই জাল করানো হয়েছে বলে জগৎবল্লপুর থানায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছে। দলের জগৎবল্লভপুরের ব্লক সভাপতি তুষার সরকার এবং মাজু অঞ্চল সভাপতি অলিপ খান বলেন, “মাজুতে কংগ্রেসের জমি শক্ত। কংগ্রেসই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ মাজু এবং উত্তর মাজু এই দু’টি সেতু পাকা করার জন্য সেচ দফতরের কাছে দরবার করে। দু’টি দাবিই যখন সেচ দফতর মেনে নিয়েছে এবং উত্তর মাজুর সেতু তৈরির কাজ শুরু করেছে তখন আমাদের দলের পঞ্চায়েত প্রধানের সই জাল করে কাজটি বন্ধ করার জন্য সেচ দফতরের কাছে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল। তা ছাড়া, মাত্র ৭ লক্ষ টাকায় কোনও পাকা সেতু তৈরি হয় নাকি? আসলে প্রধানের সই জাল করে কংগ্রেসকে স্থানীয় মানুষের চোখে হেয় করার জন্যই কাজটি করা হয়েছে।”
সেচ দফতরের আমতা সাব ডিভিশনের এসডিও স্বপন দত্ত বলেন, “উত্তর মাজুতে কাঠের সেতুটি পাকা করার জন্য মাটি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাংসদ কোটার টাকায় কাজটি হবে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি স্মারকলিপি দিয়ে কাজটি আমাদের বন্ধ রাখতে বলেন। পরে মাজু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লিখিত ভাবে আমাদের কাছে জানান স্মারকলিপিতে তাঁর যে সই রয়েছে সেটি জাল। সব কিছু আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁদের নির্দেশ মতো কাজ হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.