অসমে চলতি মরসুমে বন্যা ও ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০। আজ নলবাড়িতে টিহুর কারেমুড়া এলাকার জমা জলে তিনটি দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় মৎসজীবীরা। এই নিয়ে বন্যার জলে ডোবা ৬৪টি দেহ মিলল। ধসে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। এ ছাড়া এখনও নিখোঁজ ৫ জন। অসমে বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে আগামিকাল আসছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী। বিশেষ বিমানে তাঁরা যোরহাটে আসবেন। তারপর আকাশ থেকে মাজুলি-সহ বন্যাক্লিষ্ট বিভিন্ন অঞ্চলের অবস্থা দেখবেন।
জলসম্পদ বিভাগ সূত্রে খবর, অসমের ২৭টি জেলাই বন্যা বা ধসের কবলে। সরকারি হিসাবে মোট ক্ষতিগ্রস্ত ১৯,৩৭,৬৫৫ জন। তিন দিন বৃষ্টি না হওয়ায় জল দ্রুত কমছে। তবে, এখনও নেমাতিঘাট, তেজপুর, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া ও ধুবুরিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র। করিমগঞ্জে কুশিয়ারা, ধর্মতুলে কপিলিও বিপদসীমার উপর দিয়ে বহমান। ধুবুরি ও করিমগঞ্জেও বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় প্রশাসন। রাজ্য জুড়ে ২৬৬৭টি রাস্তা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙেছে ১৭৪১টি স্থানে। মোট ক্ষতিগ্রস্থ কাঁচা, পাকা সেতু ও কালভার্টের সংখ্যা ৪৪০। লামডিং, শিলচর ও ত্রিপুরার মধ্যে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নই রয়েছে। এনডিআরএফ-এর ১৬টি দল, সেনাবাহিনীর ৭টি ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২০টি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
বন্যায় ভাল রকম ক্ষতিগ্রস্ত ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান। উদ্দাম স্রোতেরবাধায় এনডিআরএফ ২৭ জুনের আগে অরণ্য ও অরণ্যসংলগ্ন গ্রামগুলিতে ঢুকতেই পারেনি। ১৪টি হাতি রৌমারিয়ার লোকালয়ে চলে আসে। ভেসে যাওয়া বেশ কিছু হরিণের সংবাদ পেলেও মৃত প্রাণীদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। চোরাশিকার আটকাতে জেলা প্রশাসন ডিব্রু-শইখোয়ায় দুটি ভাসমান শিবির বসায়। উদ্ধার হওয়া পশুদের চিকিৎসার জন্য কাজিরাঙা থেকে আনা হয় পশু চিকিৎসক। কাজিরাঙার পুরো উদ্যানই জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সেখানে শতাধিক প্রাণী মারা গিয়েছে। শতাধিক উদ্ধার হওয়া প্রাণীকে পানবাড়ি ও কুকুরাটা সংরক্ষিত অরণ্যে ছাড়া হয়। পবিতরার ৮০ শতাংশ এলাকা জলমগ্ন। লাউখোয়া অভয়ারণ্যে ৮টি শিবির বন্যায় ডুবে রয়েছে। বুড়াচাপোড়ির সব শিবির জলমগ্ন। মানস জাতীয় উদ্যানে বাঁশবাড়ি ও মাথানগুড়ির মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ভুইয়াঁপাড়া রেঞ্জও পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। |