মহিলা কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলা, মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক হোটেল ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্ধমানের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা শহর মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শঙ্করী দে শনিবার পুলিশের কাছে ইয়াকুব হোসেন নামে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লোকজন নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলার অভিযোগ করেন। সে দিন দুপুরেই পুলিশ ইয়াকুবকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের কাছে শনিবার সকালে শঙ্করীদেবী অভিযোগ করেন, ওই ব্যবসায়ী সে দিন ভোরে লোকজন নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তিনি-সহ বাড়ির অন্য মহিলাদের মারধর করে তারা। তাঁর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ শঙ্করীদেবীর। তাঁর আরও অভিযোগ, ঘটনার কথা পুলিশে জানালে তাঁকে খুন করা হবে বলেও ওই ব্যবসায়ী হুমকি দেন। এর পরেই শনিবার দুপুরে পুলিশ ইয়াকুবকে গ্রেফতার করে। তিনি তখন শহরের একটি টায়ারের দোকানে বসেছিলেন।
|
ধৃত ব্যবসায়ী। —নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই হোটেলে মধুচক্র চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অন্তত পাঁচটি অভিযোগ হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হোটেলে বেশ কয়েক বার অভিযান চালিয়ে ‘ইমমরাল ট্রাফিকিং অ্যাক্ট’-এ পুলিশ কয়েক জন পুরুষ ও মহিলাকে গ্রেফতারও করেছে।
কিছু দিন আগে পাওনা আদায়ের জন্য শহরের আর এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগও ওঠে ইয়াকুবের বিরুদ্ধে। সে বার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চার জনকে গ্রেফতার করেছিল।
বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই শঙ্করীদেবীকে ফোন করে ওই ব্যবসায়ী হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর সঙ্গীসাথীদের ওই হোটেলে না পাঠালে তাঁকে খুন করা হবে বলে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত ২৯ জুন জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে শঙ্করীদেবী এ সব জানিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বর্ধমান থানাকে তদন্তের নির্দশে দেন। যে নম্বর থেকে ফোন করা হচ্ছিল, সেটি ইয়াকুব হোসেনেরই বলে জেনেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই কাউন্সিলরের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধরের অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ইয়াকুবকে গ্রেফতার করে।
রবিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ভারপ্রাপ্ত সিজেএম মধুসূদন পাল পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনার সময়ে তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হবে। |