|
|
|
|
জেলায় বরাদ্দ হচ্ছে ২৫০ কোটি |
গ্রামীণ বিদ্যুদয়নে নতুন প্রকল্প |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গ্রামীণ বিদ্যুদয়নে আসছে নতুন প্রকল্প। নাম ‘সর্বগৃহে দীপ প্রকল্প’। ‘রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন’ প্রকল্পের পরিবর্তে এখন থেকে এই প্রকল্পেই গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছনোর কাজ হবে। এ নিয়ে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরে বৈঠক হবে। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। কী ভাবে নতুন প্রকল্পের কাজ এগোবে, কোন এলাকায় কাজ শুরু করা অত্যন্ত জরুরি, এই সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। ‘সর্বগৃহে দীপ’ প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক প্রণব ঘোষ বলেন, “জেলা স্তরে বৈঠকের পর নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।” রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে শুধু দারিদ্র্য সীমারেখার নীচে বসবাসকারীরা বিশেষ সুবিধা পেতেন। নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে ওই সীমারেখার উপরে বসবাসকারীরাও সুবিধা পাবেন। প্রতিটি মৌজার প্রতিটি বাড়ির আশাপাশে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার রাজ্য স্তরে এ সংক্রান্ত এক বৈঠক হয়। এই বৈঠকে নতুন প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাঁকুড়া, পুুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ রাজ্যের ‘পিছিয়ে পড়া’ ১১ টি জেলায় প্রকল্পের কাজ চলবে। প্রকল্পটি কেন্দ্রের। প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ড ফান্ড (বিআরজিএফ) থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুরে রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের গতি আশানুরূপ নয়। জঙ্গলমহল এলাকার বিভিন্ন মৌজার কাজ সে ভাবে এগোয়নি বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি এলাকায় কাজ থমকে রয়েছে। জঙ্গলমহল এলাকার ১১টি ব্লকের ২২৭৯টি মৌজায় গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে কাজ হওয়ার কথা। বছর দুয়েক আগে এই কাজ শুরু হয়। তবে এখনও সব মৌজায় কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
জেলার অন্যত্রও কাজের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা হয়েছে। ফলে, সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, এক সময় একটি সংস্থা স্বাভাবিক গতিতে কাজ না করার ফলেই কিছু সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতি দেখে সেই সময় জেলা পরিষদে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন সংক্রান্ত এক সভা হয়। পরে অবশ্য আলোচনার মাধ্যমে জট কাটে। ওই সংস্থা ফের কাজ শুরু করে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার মধ্যে নয়াগ্রামেই সবথেকে খারাপ অবস্থা রয়েছে বলে আলোচনায় উঠে আসে।
গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে গত এপ্রিলে মেদিনীপুরে এসেছিলেন বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা ডব্লুবিএসইডিসিএল-এর চেয়ারম্যান। প্রশাসনিক বৈঠকও করেন। চেয়ারম্যানকে জানানো হয়, স্বাভাবিক গতিতেই কাজ এগোচ্ছে। মাঝে একটি সংস্থা গড়িমসি করছিল। পরে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটেছে। জঙ্গলমহলের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। অথচ, এখানকার বহু মৌজা এখনও বিদ্যুৎহীন। রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন প্রকল্পে দ্রুত জেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছনোর কথা থাকলেও নানা কারণে এ ক্ষেত্রে ‘পিছিয়ে’ ঝাড়গ্রাম মহকুমা। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এক সময় মাওবাদীদের বাধায় ঠিকাদার সংস্থা কাজ করতে পারেনি। ফলে সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি। পরিস্থিতি দেখে কয়েকটি গ্রামে সৌর লন্ঠন দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, “নতুন প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, প্রত্যন্ত এলাকার বাড়ির আশপাশেও বিদ্যুতের খুঁটি রাখা। এর ফলে মানুষ চাইলেই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারবেন।” নতুন এই প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে হয় কি না, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|