রিজেন্ট পার্কের ঘটনায় মৃতার বাবার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে তদন্তকারীদের মধ্যে। অরুণ মিত্র নামে ওই ব্যক্তি শুক্রবার তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অরুণবাবু পুলিশকে যা বলেছেন, তা অনেকটা এই রকম: ‘আমি শুনেছি মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে।’ তবে কার কাছ থেকে তিনি কী শুনেছেন, সে ব্যাপারে পুলিশকে স্পষ্ট করে অরুণবাবু কিছু বলতে পারেননি। অরুণবাবুর এই বক্তব্যকে ঘিরেই গোয়েন্দাদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, কে অরুণবাবুকে ঠিক কী বলেছেন?
২৮ জুন, বৃহস্পতিবার সকালে রিজেন্ট পার্ক থানার অশোকনগরের একটি ফ্ল্যাট থেকে পামেলা মিত্র আনন্দ (৩৫) নামে এক বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পামেলার হাতে যে নোটটি গোঁজা ছিল, সেটি তাঁর স্বামীর লেখা বলতে তদন্তে জানে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ তাঁর স্বামী জয়দীপ। পামেলার বাবা অরুণবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতেই জয়দীপের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে অবশ্য পুলিশের অনুমান, পামেলা আত্মহত্যা করেছেন। দাম্পত্য-কলহের জেরেই এই ঘটনা, নাকি এর পিছনে সত্যিই কারও হাত রয়েছে, সে ব্যাপারে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বছর সাড়ে পাঁচ আগে হরিদ্বারে জয়দীপের সঙ্গে আলাপ পামেলার। সে সময় জয়দীপ একটি ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হরিদ্বারে ওই সংগঠনের আঞ্চলিক দফতরেই জয়দীপ থাকতেন বলে পামেলার পরিবারের লোকেরা পুলিশকে বলেছেন। তখন জয়দীপের পরিচয় ছিল ‘সব্যসাচী ব্রহ্মচারী’ নামে। এর পরে ওই সংগঠন ছেড়ে কলকাতায় আসেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পামেলা ও জয়দীপের বিয়ে হয়। তবে বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। জয়দীপের সঙ্গে অবশ্য তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন অরুণবাবু। মেয়ে-জামাইয়ের সমস্যার সমাধান খোঁজার সময় অনেক সময় অরুণবাবু জয়দীপের পক্ষ নিতেন বলেও তদন্তে জেনেছে পুলিশ। কিন্তু ‘পছন্দের’ জামাইয়ের বিরুদ্ধে কেন অরুণবাবু খুনের অভিযোগ করলেন, তা-ই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। শনিবার রাত পর্যন্ত জয়দীপের খোঁজ মেলেনি। জয়দীপের খোঁজ না মেলা পর্যন্ত পামেলার মৃত্যু-রহস্যের কিনারা করতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। |