পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের জমি-আন্দোলনকেই তিনি হাতিয়ার করতে চান। শনিবার ধর্মতলার মেট্রো-চ্যানেলে হুল দিবসের স্মরণ-মঞ্চ থেকে সে কথা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই জমি-আন্দোলনই তাঁর বিরোধী নেত্রী থেকে প্রশাসক হওয়ার সোপান। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেও সেই কারণেই নতুন করে সিঙ্গুর নিয়ে তিনি ফের ‘আন্দোলন-মুখী’। এ দিন প্রকাশ্যেই তাঁর আন্দোলন-ভাবনা জানিয়ে মমতা বলেন, “সাঁওতালরা জোর করে জমি দখল করতে দিতে চায়নি। কিন্তু সেই আন্দোলন করতে গিয়ে ওরা গুলি খেয়েছিল। এখনও সেই জমি নিয়েই আন্দোলন হচ্ছে। জোর করে জমি দখল করব না এটাই আমাদের ঘোষিত নীতি।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ঘোষণাস্থল মেট্রো চ্যানেল তাঁর বহু আন্দোলনের স্থান। তারও উল্লেখ করে মমতা বলেন, “এখানেই কৃষিজমি আন্দোলনের সময় ২৬ দিন অনশন করেছি। লকআপে বন্দি-মৃত্যুর প্রতিবাদে ২১ দিন ধর্নায় বসেছি।” |
মেট্রো চ্যানেলে হুল-দিবসের অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র |
আগামী বছর থেকে হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠান এখানেই হবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন রাতেই নিজের ফেসবুক পেজ এ হুল-বিদ্রোহ এবং আদিবাসীদের আন্দোলনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মমতা লেখেন, “আমি গর্বিত বোধ করি, কারণ আমি সেই সমাজের অংশ যেখানে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে উপজাতি আন্দোলন, (আদিবাসী বিদ্রোহ নামেই যা জনপ্রিয়) ঔপনিবেশিক শাসকদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল—বহু বছর আগে।” সেই সঙ্গেই রাজ্যের আদিবাসী জনগণ এবং জঙ্গলমহল নিয়ে তাঁর সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, তা ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আজ আমার জঙ্গলমহল হাসছে এবং শান্তির মাধ্যমে নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলছে।”
তাঁর আবার ‘আন্দোলন’-এর যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে মমতা বোঝান, “সে দিনের আন্দোলন (হুল আন্দোলন) ছিল মাটি নিয়ে। মা-মাটি-মানুষকে কেন্দ্র করে ওদের আন্দোলন সঠিক ছিল। তাই ওদের আন্দোলন সমর্থন করছি।” ২১ জুলাইয়ের শহিদ-স্মরণও বরাবর মমতা ধর্মতলায় পালন করেন। গতবারই তার ব্যতিক্রম হয়েছিল। এ বারও শহিদ সমাবেশ ধর্মতলাতেই হবে। সেই অনুষ্ঠানের আগে স্থানীয় ভাবে দলের কোনও নেতাকে নিজের নামে ব্যানার-হোর্ডিং লাগাতে নিষেধ করেছে তৃণমূল। এ দিন দলের কোর-কমিটির বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় ভাবে’ ছাপানো ব্যানার-হোর্ডিং-পোস্টার নিয়েই জেলায় জেলায় শহিদ দিবসের প্রচার করতে হবে। |