|
|
|
|
বজ্রাঘাতে তিনজনের মৃত্যু |
ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি বসিরহাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বসিরহাট |
ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বসিরহাট মহকুমায়। বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। আহত হয়েছেন অনেকে। ঝড়বৃষ্টিতে বাড়ি ভেঙে আহত হয়েছেন কয়েকজন। মহকুমাশাসক শ্যামল মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বজ্রাঘাতে স্বরূপনগরে দু’জন এবং সন্দেশখালিতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বসিরহাটে ছ’শোর উপর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বহু গাছ নষ্ট হয়েছে। যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে ফসলের। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার ঝড়বৃষ্টির সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছিল স্বরূপনগরের গিয়াসউদ্দিন মোল্লা এবং তাইরুল মণ্ডলের। সন্দেশখালিতে ওই সন্ধ্যায় মা ও মেয়ে-সহ মৃত্যু হয়েছে আরও চার জনের। পুলিশ জানায়, মেয়ে আমেনা খাতুনকে (১০) নিয়ে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পূর্ব আতাপুর গ্রামে ফিরছিলেন রূপজান বিবি (৪২)। বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। জয়গোপালপুর গ্রামে অনিল সর্দারের বাড়িতে বাজ পড়ে আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে এক তরুণী এবং এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নাম মিনতি সর্দার (২০) এবং সারথী সর্দার (১২)। |
|
ছবি: নির্মল বসু। |
মহকুমা ও ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের ঝড়ে বসিরহাট, বাদুড়িয়া এবং স্বরূপনগরে বহু বাড়ি, গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। কিছুক্ষণের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড অবস্থা স্বরূপনগরের বাঁকড়া-গোকুলপুর পঞ্চায়েতের গলদা গ্রামের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেল চারটে নাগাদ আকাশ কালো করে ঝড় ওঠে। মিনিট কয়েকের মধ্যে বড় বড় গাছ ভেঙে, বাড়ির চালা উড়ে সব তছনছ হয়ে যায়। বাড়ির চালে গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় আহত হয়েছেন কয়েকজন। গ্রামের মুজিবর রহমান, রমেন সর্দার বলেন, “ঝড়ের দাপটে একটি বাড়ির চাল উড়ে গিয়ে বেশ কিছু দূরে একটি গাছের ডালে আটকে যায়। অনেক গাছ দুমড়ে গিয়েছে।” ওই সন্ধ্যায় একা ঘরে ছিলেন নাজমা বিবি। ঘরের চাল ভেঙে চাপা পড়েন তিনি। গ্রামবাসীরা পরে তাঁকে উদ্ধার করেন। গ্রামেরই দুই বন্ধু রেজাউল গাজি এবং সাইরুল গাজি ঋণ নিয়ে ১০ কাঠা জমিতে কলা গাছ লাগিয়ে চাষ করেছিলেন। কলা ফলতেও শুরু করেছে। ওই বিকেলের ঝড়ে সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। কলার কাদি মাটিতে পড়ে আছে। দুই বন্ধুর কথায়, “অনেক আশা নিয়ে ঋণ করে প্রচুর কলাগাছ লাগিয়েছিলাম। সব গাছেই কাঁদি হয়েছিল। ঝড়ে সব শেষ হয়ে গেল। টাকা কী করে শোধ করব বুঝতে পারছি না।” এ ছাড়া ক্ষতি হয়েছে পাট, বেগুন, ধান চাষের। গোকুলপুর এবং পশ্চিম জয়নগর গ্রামে পোল্ট্রি ফার্ম ভেঙে প্রচুর মুরগি মারা গিয়েছে। বাঁকড়া-গোকুলপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রোকেয়া মল্লিক বলেন, “পঞ্চায়েত এলাকায় হাজারের উপর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত সাহায্যের জন্য বিডিওকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁর নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ছবি তুলে রাখা হচ্ছে।” ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে এ দিন ব্লক প্রশাসনের একটি দল গলদা গ্রাম ঘুরে দেখে। |
|
|
|
|
|