উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
কামারহাটি
অসমাপ্ত নিকাশি
র্ষা এসেছে। কিন্তু শেষ হয়নি নিকাশি প্রকল্পের কাজ। মাঝেমধ্যেই কাজ থমকে যাচ্ছে। নর্দমাগুলি ঠিকমতো যুক্ত হয়নি। সব জায়গায় পাম্পও বসেনি। ফলে এ বর্ষায়ও জল জমার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন কামারহাটি পুরসভার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ।
কামারহাটি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের জলনিকাশির জন্য ২০১০-এর অক্টোবরে জেএনএনইউআরএম-এর অধীনে নিকাশি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দেবে ৩৫ শতাংশ টাকা। ২৫ শতাংশ দেবে কেএমডিএ। বাকি ৫ শতাংশ দেবে কামারহাটি পুরসভা। প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে কেএমডিএ। চলতি বছরের বর্ষার আগেই সিংহভাগ কাজ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এখনও ৩০ শতাংশের বেশি কাজ এগোয়নি। কাজ ধীর গতিতে চলছে। এখন কাজ কার্যত থমকে রয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে নর্দমা তৈরি হলেও সেগুলি যুক্ত করা হয়নি। পাম্প বসিয়ে জমা জল বের করার পরিকল্পনা থাকলেও এখনও পাম্প বসানো হয়নি। ফলে, কামারহাটি পুরসভার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলে ভাসবে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, মূলত অর্থাভাবে ঢিমেতালে কাজ চলছে। অভিযোগ, ঠিকাদারেরা সময়মতো অর্থ পাচ্ছেন না। তাই কাজ থমকে যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী পুর-এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মাটির নীচে হিউম পাইপ বসিয়ে এবং ঢাকনা দেওয়া বড় পাকা নর্দমা তৈরি করে ছ’টি নিকাশি মুখ দিয়ে জল গঙ্গা, দাতিয়া খাল এবং উদয়পুর খালে ফেলার কথা। উদয়পুর খাল থেকে জল বাগজোলা খালে পড়বে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গার জল বের করার জন্য ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ কাঠা জমিতে পাম্পিং স্টেশনও তৈরি করার কথা।
অভিযোগ, পাম্প বসেনি। ফলে আশঙ্কা, বর্ষার জল নর্দমাতেই জমে থাকবে। নর্দমা ছাপিয়ে চারপাশ ভাসাবে। দীর্ঘ দিন জল জমলে দূষণ আর মশার উপদ্রব বাড়তে পারে। তা ছাড়া নর্দমা তৈরির জন্য রাস্তার ধারে খোঁড়াখুঁড়ি হওয়ায় এখনই যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। আরও বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছবে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কেএমডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, “কাজের জন্য ১২টি দরপত্র ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মূলত অর্থাভাবে কাজ ঢিমেতালে চলছে। প্রকল্পের কাজ ৫০ শতাংশ এগিয়ে গিয়েছে। তিনটি আউটলেট তৈরি হয়ে গিয়েছে। সব ওয়ার্ডে সমস্যা হবে না।” কামারহাটি পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আশা করি বর্ষার পরে কাজ শেষ হয়ে যাবে। মানুষের ভোগান্তি ঠেকাতে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ গঠন করা হয়েছে।’’ কেএমডিএ-র চিফ এগ্জিকিউটিভ বিবেক ভরদ্বাজের কথায়: “বর্ষার আগে কাজ শেষ করার কথা নয়। নির্দিষ্ট সময়েই কাজ শেষ হবে। উন্নয়নের কাজ চললে কিছু সমস্যা তো হতেই পারে।”
যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের তমাল দে-র বক্তব্য: “নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে বলে মনে হয় না। তাই বর্ষায় খুব সমস্যা হতে পারে। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। পাম্পও তৈরি রাখা হয়েছে। যাতে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.