|
|
|
|
দুই সেট পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত জয় ফেডেরারের |
রাফার বিদায়ে রজারের কোনও লাভ হবে না |
জয়দীপ মুখোপাধ্যায় • লন্ডন |
রাফায়েল নাদালের গত সাত বছরের মধ্যে গ্র্যান্ড স্লামে দ্রুততম বিদায় আমার কাছে চ্যাম্পিয়নের স্রেফ একটা খারাপ দিন বই আর কিছু নয়। এই একটা হারেই নাদালের দ্বারা আর গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব নয় এমন কিছু ভাবা কিন্তু ভুল। উইম্বলডনেই বরিস বেকার যখন বিশ্বসেরা, তার আগের দু’বছর চ্যাম্পিয়ন, সে সময় ১৯৮৭-তে এ রকমই দ্বিতীয় রাউন্ডে পিটার ডুহির কাছে হেরেছিল। কিন্তু তার পরেও গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছে বেকার। ডুহির কাছে হারটা ছিল একটা খারাপ দিন। রসোলের (১০০) মতো ডুহিও (৭০) অনেক নীচের সারির প্লেয়ার।
গতকাল সেন্টার কোর্টে স্বচক্ষে ম্যাচটা দেখেছি। লুকাস রসোল নামক বছর চব্বিশের চেক যুবক অলৌকিক টেনিস খেলেছে বললেও সব বলা হয় না। সাড়ে ছ’ফুটের কাছাকাছি লম্বা। কোর্টে অস্বাভাবিক দ্রুত নড়াচড়া করল। গোটা ম্যাচ ধরে অবিশ্বাস্য জোরালো সার্ভ করে গেল। ২২টা ‘এস’ মেরেছে। বরফের মতো ঠান্ডা নার্ভ। নইলে নাদালের মতো চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে পঞ্চম সেটে নিজের ম্যাচ উইনিং সার্ভিস গেমে তিনটে ‘এস’ মারতে পারে? নাদালকে লড়াইয়ে ফেরার বিন্দুমাত্র সুযোগ দিতে চায়নি। গ্রাউন্ডস্ট্রোকেও তেমনি জোর। এই ছেলে এর আগে পাঁচ বার উইম্বলডনে এসে কখনও কোয়ালিফাইং রাউন্ডেও কোনও ম্যাচ জেতেনি, বিশ্বাসই হচ্ছে না আমার!
তৃতীয় সেটে নাদালের সার্ভিস ব্রেক করে রসোল যখন ২-১ এগিয়ে, কোর্ট ‘চেঞ্জওভার’-এর সময় দুই প্লেয়ারের মধ্যে ধাক্কা লাগে। এ রকমটা আমি কখনও দেখিনি। টেনিসে প্রায় বিরল। হয়তো নাদাল অন্যমনস্ক ছিল। কারণ ধাক্কাটা ও-ই লাগিয়েছিল। গ্যালারি থেকেই শুনতে পেলাম, নাদালকে তিন বার ‘সরি, সরি’ বলে রসোলের কাছে ক্ষমা চাইতে। রসোল সে সময় ‘ও কে, ও কে’ বললেও খেলায় দেখা গেল সুপারস্টার প্রতিপক্ষকে কোনও রকম ক্ষমা করতে রাজি নয়।
নাদাল শুনলাম ম্যাচের পর প্রেস কনফারেন্সে বলেছে, “রসোল একটা দিন অসাধারণ খেলেছে। কিন্তু রোজ-রোজ মনে হয় পারবে না।” ঠিকই বলেছে। তা হলে তো কোনও ফেভারিটকে টুর্নামেন্টের গোড়ার দিকে যে অনামী হারাবে তারই শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। বরং নাদালের বিদায়ে আমার মতে জকোভিচের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাস্তা প্রায় পরিষ্কার হয়ে গেল। যদিও নাদাল ড্রয়ে জকোভিচের উলটো দিকে ছিল। দু’জনের দেখা হলে ফাইনালে হত। তার আগে সেমিফাইনালে জকোভিচকে ফেডেরারকে হারাতে হবে। তবে সেটা নিয়ে আমার বিশেষ সন্দেহ নেই। রাফার বিদায়ে রজারের কোনও লাভ দেখছি না। সে ক্ষেত্রে ফাইনালে অ্যান্ডি মারে বা জো সঙ্গা-র মতো কাউকে সামনে পাওয়ার সম্ভাবনা জকোভিচের। চ্যাম্পিয়ন না হলেই অবাক হব। নাদালের হারে ওর অর্ধে থাকা মারের উইম্বলডন জেতার সুযোগ প্রচুর বেড়ে গেল বলে ব্রিটিশ মিডিয়া দেখছি হইচই জুড়ে দিয়েছে। আমি বরং বলব, মারে আগে সঙ্গাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠুক, তার পরে ট্রফি জেতার প্রশ্ন।
বরং এর পরেও নাদালের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে আমি বাজি ধরতে রাজি। ঘাসের কোর্টে ওর টপস্পিন স্ট্রোকগুলো ক্লে বা হার্ডকোর্টের মতো কার্যকর হয় না। ভয়ঙ্কর দেখায় না। তা সত্ত্বেও দু’বার উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন। তবে এ বার উইম্বলডনে আসার আগে হ্যালেও গোড়ার দিকে হেরেছে। তার মানে ঘাসের কোর্টে নাদাল ক্রমশ বেমানান হয়ে উঠছে। তাতে অবশ্য ক্লে কোর্ট সম্রাটের আরও বারদু’য়েক ফরাসি ওপেন জিতে নিজের গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে অসুবিধে হবে না।
|
জয় এল পাঁচ সেটে |
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
তিনি কেন বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা, সেটা শুক্রবার উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন রজার ফেডেরার। তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়েও অসাধারণ লড়াইয়ে ফরাসি জুলিয়েন বেনেতোকে হারালেন ৪-৬, ৬-৭, ৬-২, ৭-৬, ৬-১। বিশ্বের বত্রিশ নম্বর বেনেতো প্রথম দুই সেট নিয়ে যাওয়ার পরে আবার একটা নাদাল-কাণ্ড ঘটে যেতে চলেছে বলে ঠিক যখন আশঙ্কা গাঢ় হচ্ছে, নিজের সেরা ফর্মটা টেনে বের করেন অল ইংল্যান্ড ক্লাবে ছ’বারের চ্যাম্পিয়ন। ম্যাচের শেষে ফেডেরার বলেন, “বেনেতো অসাধারণ খেলেছে। আমি সত্যিই ভাগ্যবান যে জিতলাম। ওর কাছে ২০০৯-এ প্যারিসে হেরেছি। জানতাম সহজ ম্যাচ হবে না। আসলে আপনি যখন দুই সেট পিছিয়ে, তখন মাথা ঠান্ডা রাখাটা খুব জরুরি হয়।” |
|
|
|
|
|