|
|
|
|
|
জার্মানির বিপর্যয়ের পাঁচ কারণ |
লো-র কিছু সিদ্ধান্ত মানতে পারলাম না
করিম বেঞ্চারিফা |
|
অন্যতম ফেভারিট হওয়া সত্ত্বেও জার্মানি কেন ইউরো থেকে ছিটকে গেল, তা নিয়ে ফুটবল দুনিয়া উত্তাল। সর্বত্রই কাটাছেঁড়া চলছে। আমার মতো করে জার্মানির হারের পাঁচটা কারণ খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।
এক) আমি বরাবর জোয়াকিম লো-র কোচিংয়ের ভক্ত। জার্মান টিমে নতুন রক্ত তিনিই আমদানি করেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর কয়েকটা সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া কঠিন। ওজিলকে কেন নিজস্ব জায়গায় খেলতে না দিয়ে ডান দিকে সরিয়ে দিয়েছিলেন লো, তার কোনও ব্যাখ্যা হয় না। একটা যুক্তি হতে পারে, ক্রুসকে দিয়ে তিনি পির্লোর ছন্দটা নষ্ট করতে চেয়েছিলেন। যা একেবারেই কাজে লাগেনি।
দুই) জার্মানি যখন ০-২ পিছিয়ে, ইতালির ডায়মন্ড মিডফিল্ড তখন মারাত্মক সক্রিয়। বোঝাই যাচ্ছিল, জার্মানিকে কিছু করতে গেলে উইং দিয়ে করতে হবে। কারণ, মাঝমাঠটা তখন পির্লোর দখলে। এই সময় কেন লো দু’জন স্ট্রাইকারের ছক নিলেন না? এমনিতেই টিমটা ০-২ পিছিয়ে। তখন যদি সামনে গোমেজের সঙ্গে ক্লোসে থাকত, উইং থেকে উড়ে আসা সেন্টারগুলোর জন্য অনেক পজিটিভ ভাবে ঝাঁপানো যেত। ক্রসগুলো আসছিল, কিন্তু একা পড়ে যাচ্ছিল গোমেজ। দ্বিতীয়ার্ধে ক্লোসেও।
তিন) ৪-২-৩-১ ছকে খেলছিল জার্মানি। সবচেয়ে বিস্ময়কর, রাইট ব্যাক লাম ও লেফ্ট ব্যাক বোয়াতেং যে উঠে এসে মাঝমাঠকে সাহায্য করে, সেটাই ইতালি ম্যাচে ছিল না। অথচ আগের সব ক’টা ম্যাচে দু’জনেই ওভারল্যাপ করে এসে আক্রমণকে অনেক সাহায্য করেছে। লাম তো আগের ম্যাচে দুর্দান্ত একটা গোলও করেছিল। ওই ছন্দটা ইতালি ম্যাচে ছিল না।
চার) ফুটবলে একটা কথা আছে, জিততে হলে টিমের স্তম্ভদের পারফর্ম করতে হবে। এই জার্মান টিমে সেই স্তম্ভরা হল সোয়াইনস্টাইগার, ওজিল, পোডলস্কি। তিনজনের কেউই সেমিফাইনালে তাদের সেরা খেলার ধারেকাছে ছিল না। আমি এখনও মনে করি এরা তিনজন ছন্দে থাকলে সেমিফাইনালের ফলাফল অন্য রকম হতে পারত। মনে রাখবেন, এ বারের ইউরোয় জার্মানি টিমেরই গড় বয়স সবচেয়ে কম। ২০১৪ বিশ্বকাপে কিন্তু ওদের উপর নজর রাখতে হবে।
পাঁচ) ইতালির অভিজ্ঞতা এবং পরিণতি-বোধ। ম্যাচ শুরুর আগে দেখুন, জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় বুফোঁরা যে ভাবে একসঙ্গে গানটা গাইছিল তাতে প্রতিজ্ঞা এবং সংকল্প ধরা পড়ে। অন্য দিকে জার্মানদের কেমন যেন চুপচাপ লাগল। এর থেকে কিন্তু ধরা যায় ম্যাচটা কেমন হতে চলেছে। অভিজ্ঞতার কথা বলছিলাম। ইতালির দুই স্তম্ভ পির্লো আর বুফোঁ দু’জনেই অনবদ্য। পির্লো যদি সেমিফাইনালে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা হয়, বুফোঁ ছিল চিনের প্রাচীর। ওকে দেখে মনে হচ্ছিল একটা পিঁপড়েকেও জালের মধ্যে ঢুকতে দেবে না। সঙ্গে বালোতেলির চমৎকার দুটো স্ট্রাইক। এই ইতালিকে থামানো কিন্তু বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পক্ষেও বেশ কঠিন হবে। |
|
|
|
|
|