|
|
|
|
একশো দিনের প্রকল্পে সমস্যা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া |
সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। যার জেরে পুড়শুড়ার ডিহিবাতপুরের তকিপুরে প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে গত ১৬ জুন পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের সুচিত্রা মান্নার নির্দেশে তদন্তে আসেন সংশ্লিষ্ট গ্রামোন্নয়ন সমিতির সচিব প্রদীপ কোলে। তাঁকে ওই সুপারভাইজারেরা হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ‘স্বচ্ছ’ ও ‘সুষ্ঠু’ কাজের পরিবেশ নেই বলে দাবি করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান। সুপারভাইজারদের শো-কজ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা যথাযথ ‘কারণ’ দর্শাতে পারেননি বলে পঞ্চায়েত সূত্রের খবর। ফের শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রধান সুচিত্রা মান্না।পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, বন্যাপ্রবণ তকিপুর এলাকায় ১৬ ও ১৭ নম্বর বুথে বাঁধ ও খাল সংস্কারের জন্য ৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছে। কাজ শুরু হওয়ার আগে গ্রাম কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হওয়ার নিয়ম। কিন্তু অভিযোগ, গ্রাম কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা না করেই সুপারভাইজারেরা কাজটি গত ৫ জুন শুরু করে দেন। সুপারভাইজার ৫ জন। এক জন সুপারভাইজার-পিছু প্রতি দিন ২৫ জন শ্রমিক কাজ করবেন, এমনটাই নিয়ম। সেই মতোই ১২৫ জন শ্রমিক কাজ শুরু করেন। এই দৈনিক হিসাবেই প্রতি দিন যাচ্ছিল পঞ্চায়েতে। কিন্তু কিছু দিন আগে গ্রামোন্নয়ন কমিটির কয়েক জন সদস্য পঞ্চায়েত ও ব্লকে অভিযোগ করেন, প্রতি দিন গড়ে ৩০০-৪০০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সব দিন আবার কাজ হচ্ছে না। সুপারভাইজারের তুলনায় শ্রমিকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় যথাযথ তদারকির অভাবে কাজের গুণগত মান খারাপ হচ্ছে। গত ১৬ জুন তদন্তে আসেন গ্রামোন্নয়ন সচিব। তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।
গ্রামোন্নয়ন কমিটির বক্তব্য, প্রচুর শ্রমিক কাজে লাগিয়ে সাত দিনে যে কাজ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে, পরে আরও ৭-১০ দিন কোনও কাজ না করিয়েও ১২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন বলে খাতায়-কলমে দেখানো হচ্ছে। এতে সরকারি টাকা নয়ছয় হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। অভিযুক্ত পাঁচ সুপারভাইজারের মধ্যে আছে দুই পঞ্চায়েত সদস্য। এক জন তৃণমূলের বুদ্ধদেব সামন্ত এবং অন্য জন সিপিএমের উত্তম সামন্ত। বুদ্ধদেববাবু বলেন, “আমাদের এখানে ৪৫০ জন জবকার্ড হোল্ডার। কাজ শুরু হতেই তাঁরা সকলে কাজে যোগ দেন। আমাদের ত্রুটি, বিষয়টি আমরা পঞ্চায়েতকে জানিয়ে পরামর্শ নিইনি। সকলকে কাজে লাগিয়ে নিয়মরক্ষা করতেই দফায় দফায় প্রতি দিন পাঁচ জন সুপারভাইজার-পিছু ১২৫ জন করে শ্রমিকের কাজের হিসেব দিচ্ছি।” কাজটি যে আইন মোতাবেক হয়নি, সে কথা মেনে নিয়ে বুদ্ধদেববাবু আরও বলেন, “আমরা সুপারভাইজারেরা অনেক বেশি দিনের বেতন দাবি করে ফেলেছি, সে কথা ঠিক। প্রশাসন আমাদের রাস্তা দেখাক।” একই বক্তব্য উত্তম সামন্তের। আর এক সুপারভাইজার তথা তৃণমূল কর্মী মিতা বাইরি অবশ্য বলেন, “কাজে কোনও গলতি হয়নি। কিছু মানুষ অভিযোগ করে কাজের গতি কমিয়ে দিলেন।” |
|
|
|
|
|