বিপন্ন মণিপুরও
মাজুলিতে সংহার মূর্তিতেই ব্রহ্মপুত্র
জানি অসম ও বরাকে বন্যার তাণ্ডব সামান্য কমলেও মাজুলিতে ব্রহ্মপুত্রের সংহাররূপ অব্যাহত। সেই সঙ্গে পড়শি রাজ্য মণিপুরেও ছ’টি নদী বিপদসীমা ছোঁয়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। অরুণাচলে চাংলাং, দিবাং বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও বিজয়পুরে আটকে পড়া ১৮৫ জন গ্রামবাসীকে উদ্ধার করেছে বিমানবাহিনী।
অসমে ২২টি জেলাকে বন্যাকবলিত বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি হিসাবে ২০৮৪টি গ্রামের ১০,৮০,১১৪ জন অধিবাসী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ। এর মধ্যে ১,৬৬,৫০৯ জনকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বরাক উপত্যকার কাছাড় ও করিমগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সেই সঙ্গে পাহাড়লাইনে আটকে থাকা ডাউন কাছাড় এক্সপ্রেসের ৪২৫ জন যাত্রী কাল রাত ১০টা নাগাদ শিলচর পৌঁছন। তিন দিন আগে লামডিং থেকে রওনা হয়েছিল ওই ট্রেন। পথে ধস নেমে হারাংগাজাওতে আটকে পড়েন তাঁরা। শেষ অবধি, লাইনের পাথর সরিয়ে, বিশেষ উদ্ধারকারী ট্রেনের ছ’টি বগিতে চাপিয়ে তাঁদের শিলচর অবধি আনা হয়। তিন দিন খাদ্য-পানীয়-ওষুধ ও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটাতে হয় তাঁদের। লাইনে পাথর পড়ে থাকায়বেশ কয়েকজন যাত্রী ধস টপকে ১৮ কিলোমিটার রেললাইন ধরে হেঁটে দামচেরা পৌঁছন। সেখানে রেল শ্রমিকদের একটি ট্রেন মেলে। যাত্রীরা তাতে উঠে বদরপুর আসেন। অন্য দিকে লামডিংয়ের পথে আটকে পড়া ট্রেনযাত্রীদেরও উদ্ধার করে আজ ভোরে গুয়াহাটি পৌঁছে দেওয়া হয়।
বন্যায় জল উঠে গিয়েছে ঘরের চাল অবধি। অসমের মরিগাঁও
জেলার মেয়ং গ্রামে শুক্রবার উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
উজানি অসমের শিবসাগরে জল কমলেও মাজুলিতে ব্রহ্মপুত্র একের পর এক গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর ১৬ টি দল উদ্ধার কাজে ব্যস্ত। কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়, বন্যায় মৃতদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। বন্যা দেখতে আসছেন সনিয়াও। কাজিরাঙাতে জল কমছে। তবে, বহু প্রাণী এখনও জঙ্গল ছেড়ে আশপাশের এলাকা ও জাতীয় সড়কে ভ্রাম্যমাণ। তিন দিনে ১৫টি হরিণ গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছে। ২৬টি হগ ডিয়ারের চিকিৎসা হয়েছে। একটি বারাশিঙা, একটি গন্ডারশাবক ও একটি হাতিশাবক চিকিৎসাধীন। এ দিকে বিপন্ন হরিণদের মেরে চলছে চোরাশিকার। আজ দুই গ্রামবাসীর কাছে ১২ কিলো হরিণের মাংস মিলেছে। বন্যার সুযোগে গন্ডারনিধনের আশঙ্কায় রয়েছে বনবিভাগ। এরই মধ্যে আজ বনবিভাগের একটি হাতি মিহিমুখ এলাকায় দুরজা বাউরি নামে নিজের মাহুতকেই পিষে মেরে ফেলেছে।
মণিপুরে ইম্ফল, ইরিল, নামবুল, থৌবাল, মণিপুর ও নামবোল নদীর জল বিপদসীমা ছাড়ানোয় তীরবর্তী বাসিন্দারা আশঙ্কায় দিন গুনছেন। আজ সকাল থেকে বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। প্রতি ঘণ্টায় জল বাড়ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য খোয়াথং, ইম্ফল ও থৌবালে শিবির বসানো হয়েছে। ইথাই বাঁধের ১ ও ২ নম্বর লকগেট খুলে দেওয়া হয়। ইম্ফল নদীর ধাক্কায় কেকরুপাটে দুই স্থানে ইটের দেওয়াল ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে জোমি ভিলা ও খোয়াথং এলাকায়। পুরোনো থুম্বুথং এলাকাতেও বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে। থোংজু কোইরু চিংখেই এলাকায় ইরিল নদীর জল বাঁধ উপছে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে।
অরুণাচল প্রদেশে চাংলাং ও দিবাং উপত্যকার বিস্তীর্ণ অংশের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। জেলাশাসক, মন্ত্রী, বিধায়ক, ইঞ্জিনিয়র, পুলিশকর্তা, সেনাবাহিনী একযোগে ত্রাণকার্য চালাচ্ছেন। বরদুমসা ও বিজয়পুরের ত্রাণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চাংলাং-এর জেলাশাসক ওপাক গাও। নোয়াং ডিহিং নদীর জল সামান্য কমেছে। ত্রাণ শিবিরে চিকিৎসকদের দল পৌঁছেছেন। ধর্মপুর এখনও বিচ্ছিন্ন। রাজ্যে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে যাচাইয়ে অবিলম্বে একটি কেন্দ্রীয় দল পাঠাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নাবম টুকি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.