|
|
|
|
আট মন্ত্রীর ইস্তফা, বিজেপি জেরবার কর্নাটক কাঁটাতেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কর্নাটকে দলের ঘরোয়া কোন্দলে ফের নাজেহাল বিজেপি। আপাতত নিজের মুখ্যমন্ত্রী পদে ফেরার আশা না থাকায় বি এস ইয়েদুরাপ্পা বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর শিবিরের কাউকে ওই পদে বসানোর জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তা আরও বাড়াতে তাঁর অনুগামী ৮ জন মন্ত্রী আজ মুখ্যমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়াকে সরানোর দাবি তুলে ইস্তফা দিয়েছেন।
দক্ষিণের রাজ্যগুলির মধ্যে কর্নাটকেই প্রথম সরকার গড়েছে বিজেপি। কিন্তু দুর্নীতির জেরে সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে হয়েছে মাঝপথে। সরতে হয়েছে ইয়েদুরাপ্পাকে। গৌড়ার হাতে দায়িত্ব দিয়ে কোনও মতে দলীয় কোন্দল ধামাচাপা দেওয়ারই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে বিজেপি-কে। কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী বদলের দাবি তুলে ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে। হুমকি দিয়েছিলেন দল ছাড়ারও। সে যাত্রা অরুণ জেটলিরা তাঁকে লাভ-ক্ষতির অঙ্ক বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, “দল ছাড়ছি না।” যদিও তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এই সমঝোতা ক’দিনের? আবার কবে বিদ্রোহ করবেন ইয়েদুরাপ্পা? সেই প্রশ্নেরই উত্তর মিলল আজ। নিজে আড়ালে থাকলেও, বিদ্রোহ করলেন তাঁর অনুগামী ৮ মন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি যখন তেড়েফুঁড়ে নামতে চাইছে, তখনই কর্নাটক ফের কাঁটা হয়ে উঠল দলের কাছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইয়েদুরাপ্পা শিবির গৌড়াকে সরানোর জন্য চাপ বাড়াচ্ছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর। ইয়েদুরাপ্পাও ক্রমাগত বার্তা দিচ্ছিলেন, অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক তাঁর ঘনিষ্ঠ জগদীশ সেত্তারকে। ইয়েদুরাপ্পার মতো সেত্তারও লিঙ্গায়েত নেতা। তাই নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে সেত্তারের পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানায়, বিজেপি নেতৃত্ব এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচার ও কৌশল নিয়ে ব্যস্ত। দলের মূল লক্ষ্য এখন এই নির্বাচনে কংগ্রেস তথা ইউপিএকে বেকায়দায় ফেলা। নির্বাচন শেষ হলেই জুলাই মাসে এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করবে দল। কিন্তু তত দিন অপেক্ষা করলেন না ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠরা।
ইয়েদুরাপ্পার যেমন লিঙ্গায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে বাজি ধরছেন সেত্তারের জন্য, তেমনই দলের একাংশও এই পরিবর্তনের পক্ষে। দলের এই অংশের বক্তব্য, সেত্তারের মতো কোনও লিঙ্গায়েতকে মুখ্যমন্ত্রী করলে তিনিই ভবিষ্যতে এই রাজ্যে দলের মুখ হয়ে উঠবেন। ইয়েদুরাপ্পাকে চাপে রাখতে যা কাজে আসবে। কিন্তু এ দিন মন্ত্রিসভায় এই বিদ্রোহকে মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছেন না নিতিন গডকড়ীরা। এর পিছনে কংগ্রেসের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করছে বিজেপি শিবির। কারণ, সম্প্রতি সম্পূর্ণ দলছুট হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করার দাবি জানিয়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা।
দলের নেতৃত্বের সামনে এখন তিনটি পথ। এক, গৌড়াকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে ইয়েদুরাপ্পাদের কড়া বার্তা দেওয়া। তাতে সরকার পড়ে যেতে পারে। দুই, ইয়েদুরাপ্পার দাবি মেনে নেওয়া। তাতে ভুল বার্তা যাবে গোটা দলের কাছেই। চাপ বাড়ানোর সুযোগ পাবে কংগ্রেস। তৃতীয় পথ, এখনই ভোটে চলে যাওয়া। সে ক্ষেত্রে ইয়েদুরাপ্পা শিবির কী করবে, সেটাও ভাবাচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। |
|
|
|
|
|