|
|
|
|
মাদার ডেয়ারির ১৫০ বুথে সব্জি বিক্রি চালু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সমন্বয়ের অভাব কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত মাদার ডেয়ারির ১৫০টি বুথে পুরোদমে সব্জি বিক্রি শুরু হয়েছে। পুজোর আগে এই ব্যবস্থা চালু হবে ৫০০ বুথে। সম্প্রতি প্রাণীসম্পদ দফতরের পদস্থ অফিসারেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সব্জি বিক্রির হাত ধরে সংস্থার লভ্যাংশ বাড়বে বলে প্রশাসনের আশা। কারণ, লোকসানে ডুবতে বসা মাদার ডেয়ারি এক বছরের মধ্যেই হয়ে উঠেছে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী এক সংস্থা।
নগরায়ণের প্রসারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বত্র বাজার তৈরি সম্ভব হয়নি। ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যাপ্ত কাঁচা বাজার মিলছে না বলে অভিযোগ যাচ্ছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি মহাকরণে এক বৈঠকে দিল্লির মতো কলকাতাতেও মাদার ডেয়ারির বুথে সব্জি বিক্রির নির্দেশ দেন মন্ত্রী ও আমলাদের। চুক্তি হয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি বিপণন এবং প্রাণীসম্পদ এই তিন দফতরের মধ্যে। এই বছরের ১ বৈশাখে ২৫টি বুথে শুরু হয় সব্জি বিক্রি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, শীঘ্রই আরও বেশ কিছু বুথে এই পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রথম আড়াই মাসে পরিষেবা বাড়ানো যায়নি।
ডেয়ারির বিভিন্ন বুথে তাজা সব্জি না পেয়ে ক্রেতাদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ। সংস্থার বিপণন ম্যানেজার সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় এ কথা স্বীকার করে বলেন, “বুথে আমাদের কাজ বিক্রি করা। সব্জি সংগ্রহ, সরবরাহের দায়িত্ব কৃষি বিপণন দফতরের। সব্জি দেরি করে বুথে আসায় পরদিন সেগুলির বেশির ভাগ নষ্ট হচ্ছিল। খারাপ সব্জি আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলাম।” কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “সব্জি সরবরাহের পরিকাঠামো সে ভাবে না থাকায় কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহজ শর্তে আমাদের পাঁচটি গাড়ি কেনার ঋণ দিয়েছে। বিভিন্ন এলাকার ডিপোয় ভাগ করে পরিকল্পনা মাফিক সব্জি সরবরাহ হচ্ছে।”
গত ১৬ জুন থেকে মাদার ডেয়ারির আরও ১২৫টি বুথে সব্জি বিক্রির ব্যবস্থা হয়েছে। সঞ্জীববাবু বলেন, “এখন মোট ১৫০টি বুথে গড়ে ২০ কিলো করে দৈনিক সব্জি বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বুথ এর ১০ শতাংশ লভ্যাংশ পাচ্ছে। পরোক্ষ কর্মসংস্থান হচ্ছে বেশ কয়েকশো পরিবারের।” গত বছর জুনে সংস্থার মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ছ’কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে লোকসান দূর হয়েছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে সংস্থার আর্থিক লাভ। চলতি মাসে এই লাভের পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেন সঞ্জীববাবু।
মাদার ডেয়ারির চিফ জেনারেল ম্যানেজার উদয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সব্জি বিক্রির পরিকাঠামোটা আমরা পর্যায়ক্রমে আরও মজবুত করছি। তাজা সব্জির জোগানের জন্য ভাঙরের একটি কৃষক সমবায় সমিতির সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।” অরূপবাবু বলেন, “মাদার ডেয়ারির বুথে এতদিন থোড়, এঁচোড়, মোচার মতো সব্জি কেটে দেওয়ার লোক ছিল না। এ বার থেকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে ক্রেতাদের। সে সঙ্গে বিভিন্ন বুথে সময় মতো সব্জি সরবরাহ হচ্ছে কি না, তা দেখতে পৃথক কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।” যে সব ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছিল, বৈঠকে তার সমাধান হয়েছে। |
|
|
|
|
|