ঘুরে দাঁড়াচ্ছে টাকা
সেনসেক্স উঠল ৪৩৯ পয়েন্ট
যেন আচমকাই বেঁচে ওঠার রাস্তা খুঁজে পাওয়া। শুক্রবার বাজারের পালে নতুন হাওয়া জোগানোর দায়বদ্ধতা ঘোষণাতেই খানিকটা চাঙ্গা হয়ে উঠল সেনসেক্স। আর একই দিনে যেন এই সংস্কারের প্রতি আস্থা রেখেই এক ধাক্কায় বেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়াল টাকা। পাশাপাশি অবশ্য ইউরোপীয় দেশগুলির ঋণ সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা তৈরি হওয়া, ভারতের বাজার নিয়ে মার্কিন আর্থিক সংস্থা মর্গ্যান স্ট্যানলির ঘোষণা এবং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম দ্রুত কমতে থাকার বিষয়গুলিও ইন্ধন জুগিয়েছে শেয়ার ও টাকার উত্থানে।
এ দিন বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স ৪৩৯.২২ পয়েন্ট উঠে পৌঁছে যায় ১৭,৪২৯.৯৮ অঙ্কে। অন্য দিকে, ডলারে টাকার দাম ১ টাকা ১৯ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫.৬১-তে। চলতি বছরে সূচক বা টাকাকে এক লাফে এতটা বাড়তে দেখেননি লগ্নিকারীরা। বাজার বিশেষজ্ঞেরা এর জন্য অনেকটা কৃতিত্বই দিয়েছেন বিতর্কিত কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইন (জেনারেল অ্যান্টি অ্যাভয়ডেন্স রুল)-এর খসড়া নির্দেশিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রের কর সংক্রান্ত বিষয়ে অনিশ্চয়তা দূর করার উদ্যোগকে। সেখানে বলা হয়েছে, কর ফাঁকির অঙ্ক একটি নির্দিষ্ট সীমা ছাড়ালে, তবেই প্রযুক্ত হবে আইনটি। এবং যে সব ক্ষেত্রে বিদেশি আর্থিক সংস্থা দ্বৈত কর এড়াতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তির সুযোগ নেবে, শুধু সেখানেই এই আইন বলবৎ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি স্রেফ খসড়া হলেও, ভারতে লগ্নির ক্ষেত্রে কর দেওয়া নিয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে এতে। ফলে শুক্রবারই তড়িঘড়ি শেয়ার বাজারে ফিরেছে বিদেশি লগ্নিকারীরা। এক দিনেই ঢুকেছে ৩,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ।
তথ্যসূত্র: পিটিআই, বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ
এ দিকে, এই দিনই ব্রাসেলস থেকে খবর আসে, আর্থিক সঙ্কটে দিশেহারা ইউরোপীয় দেশগুলিকে বাঁচাতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর শীর্ষ কর্তারা। যাঁরা দু’বছরের উপর চলা তীব্র অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির পথ খুঁজতেই বৈঠকে বসেছিলেন। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর, শেষ পর্যন্ত ঋণের ফাঁদে নাভিশ্বাস ওঠা বিভিন্ন ইউরোপীয় ব্যাঙ্ককে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। কমাতে চাইছেন ইতালি, স্পেনের মতো সঙ্কটাপন্ন দেশের ধার করার খরচ। এর ফলে হংকং, তাইওয়ান, জাপান ও চিনের মতো এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারও এ দিন অনেকটা উঠে যায়। বিপুল পরিমাণে বেড়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজারও। খোলার পরে বাড়তে থাকে মার্কিন শেয়ার বাজারও। এই ইতিবাচক মনোভাবের ছোঁয়া ছিল ভারতেও।
এরই মধ্যে এ দিন ভারতীয় শেয়ার বাজারকে ‘ইক্যুয়ালওয়েট’ মর্যাদায় উন্নীত করেছে মার্কিন উপদেষ্টা সংস্থা মর্গান স্ট্যানলি। লগ্নিকারীদের আস্থা বাড়ানোর পিছনে এরও কিছুটা ভূমিকা ছিল। এ সবের পাশাপাশি ইতিবাচক আর একটি দিক হিসেবে যোগ হয়েছে বিশ্ব বাজারে অনেকটাই নীচে থাকা অশোধিত তেলের দাম।
এই পরিপ্রেক্ষিতে এডেলউইস ক্যাপিটাল মার্কেটস-এর শেয়ার বাজার বিষয়ক বিভাগের কর্তা নীতিন জৈন বলেন, “বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ থেকে নেমে এসে ৯০ ডলারের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। ফলে কমছে তেল আমদানি খরচ। এটা দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আর্থিক অবস্থাকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করবে। এই অবস্থায় বিশেষত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে লগ্নি করতে উৎসাহিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে সেনসেক্স দ্রুত ৫-৬% বেড়ে ১৮ হাজার ছুঁয়ে ফেলতেই পারে।”

রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে
চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দু’মাসে (এপ্রিল-মে) দেশের রাজকোষ ঘাটতি বাজেটে প্রস্তাবিত অঙ্কের প্রায় ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে। কন্ট্রোলার জেনারেল অফ অ্যাকাউন্টস প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তা ওই সময়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪১ লক্ষ কোটি টাকা। বাজেটের প্রস্তাব অনুসারে ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি হওয়ার কথা ৫.১৩ লক্ষ কোটি টাকা। যা দেশের জাতীয় আয়ের ৫.১%। এ দিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে গত অর্থবর্ষে দেশের বৈদেশিক ঋণ ১৩% বেড়ে হয়েছে ৩৪,৫৮০ কোটি ডলার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.