শিলিগুড়ি হাসপাতালে রোগীমৃত্যু
গাফিলতিতে ক্ষোভ
বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এক ব্যক্তির মৃতুকে ঘিরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। বুধবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ওই ঘটনায় হাসমিচকে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়, বাসিন্দাদের একাংশ। মৃত রোগীর নাম মহম্মদ সৌগত আলি (২৮)। বাড়ি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুরেশিমহল্লায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা নাগাদ তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার বেলা ১টা নাগাদ তিনি মারা যান। চিকিৎসক বা হাসপাতাল সুপার কাউকে না পেয়ে ক্ষোভ দেখান রোগীর লোকজন। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, এ দিন সকালে রোগী ভাল আছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। এমনকী বিকেল চারটের সময় ছুটি দেবেন বলে জানান। তা ছাড়া বাইরে থেকে কোনও ওষুধ কিনতে হবে কি না সে ব্যাপারে পরিবারের লোকেরা চিকিৎসককে বারবার অনুরোধ করেছেন। ওষুধ লাগবে না বলে জানানো হয়েছিল। এ দিন বিকেল ৪ টে নাগাদ সৌগতবাবুর মা, বাবা এবং আত্মীয়রা হাসপাতালে গেলে তাদের ওয়ার্ডে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এর পরই তাঁরা জানতে পারেন রোগী মারা গিয়েছে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও দেখা করতে পারেননি। এর পর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় রোগীর লোকজন। রাস্তা অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ হয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” যাঁর অধীনে সৌগত আলির চিকিৎসা চলছিল সেই চিকিৎসক শীর্ষেন্দু পাল বলেন, “চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। অনেকটা কীটনাশক খেয়েছিলেন সৌগতবাবু। তার পর খাবারও খান। অসুস্থ বোধ হলে বাইরে কাউকে দেখিয়ে ওষুধও খেয়েছেন। তাতেও সমস্যা মেটেনি দেখে সন্ধ্যায় হাসপাতালে এনে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে। ততক্ষণে বিষক্রিয়ায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।” মৃতের ভাই ভাই মহম্মদ সাহিজাদার প্রশ্ন, রোগী গুরুতর অসুস্থ দেখে চিকিৎসক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করতে পারতেন। তা তিনি কেন করেননি?” চিকিৎসক জানায়েছেন, সৌগতবাবু এ দিন সকাল থেকে অস্থির হয়ে প্রচন্ড ছটফট করছিলেন। যার জন্য হাত-পা বেঁধে রাখা পর্যন্ত হয়েছিল। রোগীর পরিস্থিতি মোটেই ভাল ছিল না। এ ধরনের রোগীকে নিয়ে যেতে সমস্যা হবে দেখে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেননি। হাসপাতালেই চিকিৎসা করছিলেন। তিনি রোগীকে ছুটি দেওয়ার কোনও কথাও বলেননি। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান এলাকার কাউন্সিলর রুমা নাথ। তিনি চিকিৎসক বা হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু কাউকে পাননি বলে অভিযোগ। রুমাদেবী বলেন, “চিকিৎসক বা হাসপাতাল সুপার রোগীর লোকদের সঙ্গে কতা বলতে পারতেন। তা হলে এতটা ক্ষোভ বিক্ষোভ হয় না।” হাসপাতাল সুপার প্রদীপ সরকার অবশ্য এ ব্যাপারে সদুত্তর দেননি। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন। তাঁকে কেউ খবর দেয়নি। তিনি শুধু বলেন, “বিষক্রিয়ায় অসুস্থ ছিলেন ওই রোগী। তাঁর পরিস্থিতি ভাল ছিল না।” মৃতের মা সমীর খাতুন-সহ আত্মীয়রা অবশ্য তাতে আশ্বস্ত নন। স্ত্রী ইসরত বেগম বলেন, “জোর করে ওঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ঠিক মতো চিকিৎসা করা হয়নি। ওষুধ কিনতে হবে কি না জানালে চিকিৎসক কিছু প্রয়োজন নেই বলেছিলেন।” রোগীর আত্মীয়দের দাবি, মঙ্গলবার গ্যারেজে কাজ করতে গিয়ে বোতলে জল ভেবে ‘স্পিরিট’ খেয়েছিল সৌগত আলি। এর পর জল খায়। শরীর ভাল না লাগায় গ্যারেজ থেকে বাড়িতে ফিরে স্নান করে। খাবারও খায়। অবস্থার অবনতি হলে মা এবং পরিবারের লোকদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.