বৈঠক হয়নি ৫ মাস
ইসি এড়িয়ে বিতর্কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ
গ্জিকিউটিভ কমিটি (ইসি)-কে এড়িয়ে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আইন অনুযায়ী, ইসি-ই পর্ষদের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি।
যদিও পর্ষদ-সভাপতির দাবি, ইসি-তে আলোচনা করে সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
পর্ষদের আইন মোতাবেক দু’মাসে এক বার, অর্থাৎ বছরে অন্তত ছ’বার ইসি-র বৈঠক ডাকতেই হবে। কিন্তু এ বছরে এ পর্যন্ত এক বারই ইসি বসেছে। গত ১৬ জানুয়ারির সেই বৈঠকের পরে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাসে ইসি-র একটা বৈঠকও হয়নি। পর্ষদের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল অনেকের বক্তব্য: আইনি হোক বা শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় ইসি-কে বাদ দিয়ে পর্ষদের প্রায় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তাই মাসে একটা তো বটেই, কখনও কখনও একাধিক বৈঠকও ডাকতে হয়।
এ দিকে মাধ্যমিকে মোট নম্বর ফেরানো, পরীক্ষার ফলের সঙ্গে মেধা-তালিকা প্রকাশ, ছাত্রছাত্রীদের বই দেওয়ার পদ্ধতি বদল কিংবা কর্মী নিয়োগ ও বদলি সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত পর্ষদ নিয়েছে গত পাঁচ মাসে। কোনওটাতেই ইসি-র পরামর্শ বা অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যার দরুণ ইসি-র সদস্যদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয় বলে পর্ষদ-সূত্রের খবর। পর্ষদের আইন মেনে ‘রিকুইজিশন’ বৈঠকের দাবিতে ২০ জন ইসি সদস্য পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠান গত ১২ জুন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইন অনুযায়ী, ওই চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পর্ষদের সাধারণ সভার বৈঠক ডাকতে হবে। সেই মতো বুধবার সাধারণ সভা ডাকা হয়।
সূত্রের দাবি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ৬১ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ‘রিকুইজিশন’ বৈঠক কার্যত বেনজির। কী হল সেই বৈঠকে?
এক ইসি সদস্য বলেন, “গোটা দেশের উল্টো পথে হেঁটে মাধ্যমিকে মোট নম্বর, মেধা-তালিকা ইত্যাদি প্রকাশ করা হল, অথচ সেখানে ইসি-র কোনও মতামতই নেওয়া হল না! কেন এমন করা হল, পর্ষদের সভাপতি তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।” উল্লেখ্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ইসি-সদস্যদের মধ্যে এখনও বামপন্থীদের প্রভাব বেশি। বেশ কিছু নীতিগত পরিবর্তনে তাঁরা বাধা দিতে পারেন আশঙ্কা করেই কি পর্ষদ-কর্তৃপক্ষ ইসি ডাকেননি?
পর্ষদের সভাপতি চৈতালি দত্ত অবশ্য তা মানতে নারাজ। বরং তিনি বলছেন, “মাধ্যমিকের মতো এত বড় একটা পরীক্ষা নিয়ে ফল বার করা হল, ইসি-র বৈঠক ডাকার সময় তো পেলাম না!” চৈতালিদেবীর দাবি, “সব কিছুর জন্য ইসি ডাকলে কাজের গতি থমকে যাবে। মোট নম্বর ও মেধা-তালিকা নিয়ে পর্ষদের পরীক্ষা সংক্রান্ত কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইসি ডাকার দরকার নেই।” পর্ষদ সভাপতি এই যুক্তিও দিচ্ছেন যে, মোট নম্বর ফেরানো বা মার্কশিট প্রকাশ করাটা রাজ্য সরকারের নীতি। তাই তা কার্যকর করতে ইসি’র প্রয়োজন নেই।
কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একটি স্বশাসিত সংস্থা। সরকার কোনও সিদ্ধান্ত তার উপরে চাপাতে পারে না। ইসি-তে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই সেখানে নিয়ম বলে জানাচ্ছেন পর্ষদের প্রাক্তন কর্তারা। পর্ষদের এক প্রাক্তন সচিবের কথায়, “মার্কশিটে মোট নম্বরের উল্লেখ বা মেধা-তালিকা প্রকাশ নীতিগত সিদ্ধান্ত। এর জন্য ইসি-র আনুষ্ঠানিক অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন।” সভাপতির কী মত?
গত বছর অগস্টের শেষে দায়িত্ব নিয়েছেন চৈতালিদেবী। এ দিন তিনি বলেন, “আমি তো এখানে নতুন। তাই পর্ষদ ও স্কুলশিক্ষা দফতরের অভিজ্ঞ আধিকারিকদের পরামর্শেই যা করার করেছি।” জুলাইয়ের মাঝামাঝি ইসি-র পরবর্তী বৈঠক ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.