শিল্পাঞ্চলে একের পর এক খুনের ঘটনায় বিভ্রান্ত ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ ও প্রশাসন। গত ছ’মাসে ব্যক্তিগত আক্রোশ, দুষ্কৃতীদের মধ্যে সংঘর্ষ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছাড়াও ‘রাজনৈতিক খুন’-এর ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি। অধিকাংশ ঘটনারই এখনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
সোমবার রাতে, টিটাগড় থানা এলাকার পলতায় তৃণমূল নেতা শ্যাম মল্লিক (৩৮) খুনের ঘটনার তদন্তে নেমেও অন্ধকারে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। চলতি মাসেই খড়দহের বি টি রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তায় দিনের বেলা গুলি করে খুন করা হয় অজয় সোয়াইন নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে। তার তিন দিন পরে খড়দহেরই রহড়ায় খুন হন নিতাই দাশগুপ্ত নামে আর এক তৃণমূল নেতা। ওই দু’টি ঘটনারও কিনারা হয়নি এখনও। শ্যাম মল্লিক খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও পরিচিত কেউ খুন করেছে এই সূত্র ছাড়া নতুন কোনও তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি ব্যারাকপুর কমিশনারেট তৈরির পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই শিল্পাঞ্চলে খুনের ঘটনা ঘটেছে মোট ৪৫টি। এর মধ্যে ১০টি ঘটেছে গত এক মাসে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তৃণমূল সেবাদলের শান্তিনগরের চেয়ারম্যান ছিলেন শ্যাম। ব্যারাকপুরের যুব নেতা তথা ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে গ্রেফতার করুক, এটাই আমাদের দাবি।’’
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘শ্যামকে যারা খুন করেছে তারা ওঁর বিশেষ পরিচিত ছিল। খুনের আগে শান্তিনগরে রথের মেলার সামনে শ্যামের সঙ্গে খুনিদের কথা হয়। তবে শ্যামের সঙ্গে কার কার গণ্ডগোল ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে জুয়ার বোর্ড চালানো, তোলাবাজি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল শ্যামের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পলতায় তিনি একটি প্রাসাদোপম বাড়িও বানিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে শান্তিনগরে রথের মেলার মাঠে ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের সঙ্গে বসেছিল শ্যাম। তখনই দুষ্কৃতীরা এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলে। শ্যামের স্ত্রীও মেলায় ছিলেন। শ্যামের সঙ্গীরা মেলার ভিতরে ঢুকে গেলে দুষ্কৃতীরা ফের এসে তাঁর কানের পাশে গুলি করে। বোমাও ছোড়ে। লোকজন ছুটোছুটি শুরু করলে সেই সুযোগে পালায় তারা। পুলিশ এই ঘটনায় কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। |